ক্লাস চলছে পুলিশ কর্তার কাছে। —নিজস্ব চিত্র।
‘স্যার, ইংরেজির নাম শুনলেই আমার ভয় লাগে। এই ভয় কাটাব কী করে?’
বছর চব্বিশের এক যুবকের প্রশ্নটা মন দিয়ে তাঁরা শুনলেন। বেশ কিছু পরামর্শও দিলেন।
বন্ধুর প্রশ্ন শেষ হতেই পাশের যুবকের প্রশ্ন‘স্যার, আমি বেশ কিছু চাকরির লিখিত পরীক্ষায় পাশ করছি। কিন্তু আটকে যাচ্ছি মৌখিকে। এমনটা কেন হচ্ছে?’
পরামর্শদাতারা এ বারেও বেশ কিছু উপায় বাতলে দিলেন।
পুলিশের চেনা পরিচয় ছেড়ে এবার রীতিমতো শিক্ষকের ভূমিকায় জেলার পুলিশ কর্তারা। বুধবার থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে নদিয়া জেলা পুলিশের নিজস্ব ‘সিটি’ বা ‘কনস্ট্রাকটিভ ইন্টার্যাকশন অ্যান্ড ট্রেনিং অফ ইউথ’ প্রকল্পের সূচনা হল। এই প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার যুবকদের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার প্রশিক্ষণ দেবেন জেলার পুলিশ সুপার থেকে শুরু করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। জেলা পুলিশের দাবি, এই প্রকল্পের মাধ্যমে যাঁরা সত্যি সত্যিই সরকারি চাকরির জন্য পড়াশুনো করেন, অথচ সঠিক পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ না থাকার জন্য সফল হতে পারেন না তাঁরা লাভবান হবেন। জেলার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “আমরা বড়রা কিন্তু যুব সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন। সব সময় আমরা বড়রা তাঁদের ঠিকমতো বুঝতে পারি না। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা জীবিকার সন্ধান না পেয়ে চরম অনিশ্চয়তা থেকে বিপথগামী হয়ে পড়ে। আমরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেই সব যুবকদের একটা দিশা দেখাতে চাইছি। তাঁদের আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলতে চাইছি।” সেই সঙ্গে চাকরির পরীক্ষার সাফল্যের সহায়ক বই ও পত্রিকার একটি পাঠাগারও তৈরি করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
এ দিন পুলিশ সুপারের দফতরের কনফারেন্স হলে প্রথম দিনের ক্লাস হয়। ক্লাস শেষে উচ্ছ্বসিত শম্ভুনাথ দাস, অভিষেক পাল, সম্রাট সরকাররা। তাঁরা জানান, নিয়মিত চাকরির পরীক্ষা দিয়েও সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে তাঁরা বার বার পিছিয়ে পড়েছেন। তাঁদের কথায়, “নিখরচায় এমন অভিজ্ঞ মানুষদের কাছে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাব সেটা ভাবতেই পারিনি। আশা করছি এ বার আমরা সফল হব।” ফি সপ্তাহে শনি অথবা রবিবার এই কনফারেন্স হলেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।