সন্তানের সামনে খুন দম্পতি, ধৃত প্রথম পক্ষের স্বামী

তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন স্ত্রী। পরে আবার সেই ছেলেমেয়েদের ভরনপোষণের জন্য টাকা চেয়ে গিয়েছিলেন আদালতে। সেই রাগে প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও নিজের ভাইকে লোক লাগিয়ে খুন করানোর অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুক্রবার গভীর রাতে নদিয়া জেলার চাপড়ার সুভাষপল্লিতে তিন ছেলে-মেয়ের সামনেই মমিনুল বিশ্বাস (৩৫) ও রেহেনা বিবিকে (৩০) খুন করে আততায়ীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চাপড়া শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৪ ০৩:৫৭
Share:

তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন স্ত্রী। পরে আবার সেই ছেলেমেয়েদের ভরনপোষণের জন্য টাকা চেয়ে গিয়েছিলেন আদালতে। সেই রাগে প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও নিজের ভাইকে লোক লাগিয়ে খুন করানোর অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

Advertisement

শুক্রবার গভীর রাতে নদিয়া জেলার চাপড়ার সুভাষপল্লিতে তিন ছেলে-মেয়ের সামনেই মমিনুল বিশ্বাস (৩৫) ও রেহেনা বিবিকে (৩০) খুন করে আততায়ীরা। ওই ঘটনায় রেহেনা বিবির প্রথম পক্ষের স্বামী শাহিদ বিশ্বাস ওরফে গুটা-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শাহিদ ও হিয়াত আলি নামে তাঁর এক সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নদিয়ার পুলিশ সুপার সব্যসাচীরমণ মিশ্র বলেন, “জেরায় আমাদের কাছে শাহিদ খুনের কথা স্বীকার করেছে। নিহত মহিলা সন্তানদের জন্য টাকা চেয়ে মামলা করেছিলেন। চলতি মাসের ২০ তারিখে ওই মামলার দিন ছিল। তাই নিয়ে বিরোধের জেরেই খুন।”

বছর ষোলো আগে বানিয়াকড়ির রেহেনার সঙ্গে বিয়ে হয় বালিমাঠপাড়ার শাহিদ বিশ্বাসের। পরে তিন সন্তানের জননী রেহেনা বিবির সঙ্গে তাঁর বিবাহিত দেওর মমিনুলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বছর পাঁচেক আগে তাঁরা বিয়ে করে সুভাষপল্লিতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে উঠে যান। সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে যান রেহেনা বিবি। কলা ব্যবসায়ী মমিনুলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী পরে অন্যত্র বিয়ে করেন। ফলের দোকানদার শাহিদও বিয়ে করেন আবার।

Advertisement

শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ মমিনুলের বাড়িতে ৭-৮ জনের একটি দল হানা দেয়। দরজায় কড়া নেড়ে তারা জানায়, থানা থেকে আসছে। রেহেনা বিবি দরজা খুলে দিলেই দুষ্কৃতীরা ভিতরে ঢুকে পড়ে। পাশের ঘরেই শুয়ে ছিল রেহেনার মেয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রোজমিনা বিশ্বাস। সে বলে, ‘‘হঠাত্‌ দরজা খোলার শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙে যায়। ঘরে ঢুকে ওরা মায়ের মুখে রুমাল চাপা দিয়ে বাইরে নিয়ে যায়। তারপর চার জন মিলে বাবাকে মারতে থাকে। বাধা দিতে গেলে বন্দুক দেখিয়ে আমাদের চুপ করায়। আমাদের সামনেই বাবার গলায় টায়ার জড়িয়ে খুন করে।’’ দুষ্কৃতীদের সকলের মুখ গামছায় ঢাকা থাকলেও রোজমিনার দাবি সে এক জনকে চিনতে পেরেছে। তার কথায়, “মুখের গামছা খুলে যেতেই হিয়াত আলি নামে এক জনকে আমি চিনে ফেলি। বালিমাঠপাড়ার বাড়িতে তার আসা-যাওয়া ছিল।’’

দুষ্কৃতীরা বাড়ি ছাড়তেই কান্না জুড়ে দেয় তিন ভাই-বোন। গভীর রাতে তাদের কান্নার শব্দে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। চোখের সামনে সত্‌ বাবা আর মাকে খুন হতে দেখে আতঙ্কে কুঁকড়ে রয়েছে তিন ভাই-বোন। আপাতত মামার বাড়িতেই থাকবে সাহিল, রোজমিনা ও রুমালা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন