জখমদের দেখতে হাসপাতালেও।
লরি দুর্ঘটনায় মৃত বেলডাঙার দুই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। ওই দুই পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে তিনি বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ বেলডাঙা-১ ব্লকের সুরুলিয়া গ্রামে যান। এ দিন তিনি ওই দুই পরিবারের সদস্যদের হাতে আর্থিক সাহায্যও তুলে দেন। গত সোমবার রাতে বেলডাঙা-১ ব্লক কার্যালয়ের কাছেই পণ্যবাহী একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চায়ের দোকানে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান সুরুলিয়া গ্রামের মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা বাসারুল শেখ ও বেলডাঙা পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা খাজারুদ্দিন শেখ। অধীর চৌধুরী বলেন, “৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বেহাল দশার কারণে নিরীহ ওই দুজন মানুষ মারা গেল। ওই পরিবারের সদস্যরা যাতে বিমার টাকা পান, সে ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি।”
অধীরবাবুর হাত ধরে বাসারুলের মা বলেন, “ছেলের আয়ে সংসার চলত। ছেলে মারা যাওয়ায় এখন আমাদের সংসার ভেসে গেল।” এর পরেই অধীরবাবু যান বিডিও অফিসের গা লাগোয়া খাজারুদ্দিন শেখের বাড়িতে। ওই বাড়িতে রয়েছেন সদ্য স্বামীহারা শামসুন্নাহার বেওয়া এবং তাঁর কলেজ পড়ুয়া মেয়ে খুশিনা খাতুন ও ১৭ বছরের ছেলে। ওই বাড়িতে গিয়েই অধীরবাবু জানতে পারেন, ঘটনার পরের দিনই কলেজে খুশিনার বাংলা পরীক্ষা ছিল। বাবার মৃত্যুতে ভাল পরীক্ষা দিতে পারেনি।
বেলডাঙা থেকে বহরমপুরে ফিরেই অধীরবাবু ওই দুর্ঘটনায় আহতদের দেখতে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও যান। ওই পথ দুর্ঘটনায় প্রায় ১০ জন হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন। তার মধ্যে এক জনকে এ দিন কলকাতার সরকারের রেফার করা হয়েছে। অধীরবাবু জানান, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণ নিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত কোনও ছিল না। জমি নিয়ে আমরা কোনও নঞর্থক রাজনীতি করিনি। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জমি নিয়ে যে নোংরা রাজনীতির জন্ম দিয়েছেন, তার ফল ভুগতে হচ্ছে আমাদেরও। মুর্শিদাবাদে কোথাও বিদ্যুতের, কোথাও টেলিফোনের খুঁটি সরানোর প্রয়োজন রয়েছে, কিন্তু রাজ্য সরকারের উদাসীনতায় তাও হচ্ছে না। ফলে যারা প্রতি দিন সন্ধ্যা কাজের শেষে চায়ের দোকানে গল্প-আড্ডা দিতে আসেন, গ্রামের এমন নিরীহ দুজন মানুষ মারা গেলেন। ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।
—নিজস্ব চিত্র।