কর্মীদের মাঝে গায়ক প্রার্থীর ছবি তুলেছেন সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়।
বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে ইন্দ্রনীল সেনের নাম ঘোষণার পরেই মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি হুমায়ুন কবীর ‘রাজনৈতিক সন্ন্যাস’ নেওয়ার কথা বলেছিলেন। বুধবার বহরমপুরে এক কর্মিসভায় হুমায়ুন কবীর বলেন, “আমি তাঁকে খুব বেশি চিনতাম না। এখন কোনও ভুল বোঝাবুঝি নেই। যে কোনও ভাবেই ইন্দ্রনীল সেনকে জেতাতে হবে, এটাই আমার লক্ষ্য।” ইন্দ্রনীলও সভায় পাল্টা বলেন, “আমি তো বিয়ে করতেই এসেছি। আমি ভাগ্যবান যে শুভদৃষ্টি হওয়ার আগেই হুমায়ুনের সঙ্গে বিতর্কটা হয়েছিল।” সভা শেষে ইন্দ্রনীল বলেন, “হুমায়ুন কোনও দিন বিরোধিতা করেনি তো! আমার হয়ে হুমায়ুন দারুণ প্রচার করছে।”
এদিন বহরমপুর পুরসভার বিরোধী দলনেতা প্রদীপ নন্দী বলেন, “ভোটারদের কাছে ভদ্র-নম্রভাবে ভোট চাইতে হবে। আমরা কোনও ব্যক্তিগত আক্রমণে যাব না।” ওই প্রসঙ্গ টেনে ইন্দ্রনীল বলেন, “কে কী হুমকি দিচ্ছে ভাববেন না। ভদ্র-নম্র ভাবে ভোট চাইতে হবে। আবার বিপক্ষের কোনও নেতা যদি মাস্ল দেখায়, বুকের ছাতি দেখায়, তাহলে হুমায়ুনের মতো মাস্ল দেখাতে হবে। কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবেন, ইন্দ্রনীল ৩৩ বছর ধরে গান গাইছে। তার ছাতিটা কিন্তু ৪২ ইঞ্চি।”
প্রথম কর্মীসভাকে ঘিরে তাঁর উপলব্ধি, “কর্মীরা ফুললি চার্জড্। আগামী ১৬ মে ব্যালট বাক্স খোলার পরেই কীভাবে বিজয় উৎসব করব, তাই নিয়ে ভাবছি। রাজ্য জুড়ে প্রথম প্রথম লোকে অন্য রকম ভাবছিল। আসলে এত বছরের অভ্যেস তো! এখন হাওয়া বদলে গিয়েছে। বিশেষ করে ২০ মার্চ দিদি আসার পরে। আমাকে ভোট চাইতে হবে না। বহরমপুরের মানুষ ভোট আমাকে এমনিই দেবেন। কংগ্রেস নয়। আমাদের টার্গেট আরএসপি।”
এদিন হুমায়ুন কবীর বলেন, “অধীরবাবুর ম্যান পাওয়ার খতম হয়ে গিয়েছে। মানি পাওয়ারটা আছে। তাও আলগা করে দেব। নির্বাচন কমিশনের এক্সপেনডিচার পর্যবেক্ষক আসছে। তাঁকে সামাল দিতে পারে কিনা তা দেখব।”
জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র অশোক দাস বলেন, “নির্বাচন কমিশন ও তৃণমূল দল যে এক নয়, তা বোঝার মতো বোধ ও শিক্ষা কোনওটাই হুমায়ুন কবীরের নেই। তাই এই ধরণের বালখিল্য মন্তব্য করে অধীর চৌধুরী নয়, নিজেকেই তিনি জনগণের সামনে ছোট করছেন।”
এ দিন সন্ধ্যায় শক্তিপুরের দোপুকুরিয়া ফুটবল মাঠে কর্মিসভায় ইন্দ্রনীল বলেন, “এই কেন্দ্রে হুমায়ুন আমার ক্যাপ্টেন। এখানে আসার সময় ও আমাকে এই বিধানসভা কেন্দ্রে ১৫ হাজার ভোটে এগিয়ে রাখার কথা দিয়েছে। কিন্তু আমি বলেছি ২৫ হাজারে এগিয়ে রাখতে। কর্মীরা পাশে থাকলে এ কাজ কঠিন হবে না। হুমায়ুনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলে। সেসব মিথ্যে কথা। আমি এই কেন্দ্রের সাংসদের নাম ভুলে গিয়েছি। আমি চাইছি সকলেই তা ভুলে যাক। আপনারা আমাকে নয়, ভোট দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কেন্দ্রে আমাদের নেত্রী ছাড়া আর কারও সরকার গড়ার ক্ষমতা নেই।”