পুরসভায় মেয়র শোভনের ঘরে সিবিআই হানা

শুক্রবার সকাল পৌনে এগারোটায় এসে প্রায় সওয়া এক ঘণ্টা ধরে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘর, অ্যান্টিচেম্বার এবং বাইরে থেকে ঢোকার পথ ও সিঁড়ির ছবি ক্যামেরাবন্দি করেন অফিসারেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫২
Share:

তদন্ত: মেয়রের ঘরের সামনে সিবিআই অফিসাররা। শুক্রবার। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।

নারদ কাণ্ডে সিবিআই এ বার হানা দিল কলকাতা পুরসভায়, খোদ মেয়রের ঘরে।

Advertisement

শুক্রবার সকাল পৌনে এগারোটায় এসে প্রায় সওয়া এক ঘণ্টা ধরে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘর, অ্যান্টিচেম্বার এবং বাইরে থেকে ঢোকার পথ ও সিঁড়ির ছবি ক্যামেরাবন্দি করেন অফিসারেরা। সিবিআইয়ের দল যখন দফতরে ঢোকে শোভনবাবু তখন ছিলেন না। তাঁর ওএসডি অম্লান লাহিড়ীকে সামনে রেখেই ওই ঘরের ছবি তোলার কাজ শুরু করা হয়। সিবিআই সূত্রের খবর, পরে মেয়রকে ডেকে পাঠানো হয় সেখানে। ১১টা ১৫ নাগাদ মেয়র চলে আসেন। তাঁর সামনেও চলে ছবি তোলার কাজ। সিবিআই সূত্রের খবর— ঘুষ নেওয়ার ফুটেজে যে ছবি পাওয়া গিয়েছিল, এ দিন মেয়রের ঘরে বসে তাই মিলিয়ে দেখেন তদন্তকারী অফিসারেরা।

শোভনবাবু পরে জানান, শুধুই ছবি তোলা হয়েছে। নারদ কাণ্ডের বিষয়ে তাঁকে কোনও প্রশ্ন করেনি সিবিআই। ইডি ও সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শোভনবাবু। সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের কথায়, নারদ স্টিং কাণ্ডের সম্পাদিত ও অসম্পাদিত তাঁকে ফুটেজ দেখানো হয়েছে। তা দেখার পরও শোভনবাবু নিজের অবস্থান বদলাননি।

Advertisement

এ দিকে পুরসভায় সিবিআইয়ের টিম ঢোকায় কর্মীদের মধ্যেও কানাঘুষো শুরু হয়। পুর-কমিশনারও সে সময়ে ঢোকেননি। আর মেয়র পারিষদেরা একটু বেলাতেই আসতে অভ্যস্ত। যে সব অফিসার, ইঞ্জিনিয়ার হাজির ছিলেন, তাঁরা অনেকেই ওই কাণ্ড দেখে মেয়রের ঘরের ধারে কাছে ঘেঁষতে চাননি।

আরও পড়ুন: প্রণবই বেশি ভাল প্রধানমন্ত্রী হতেন, বললেন মনমোহন

নারদ স্টিং কাণ্ডে ছদ্মবেশী সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েলকে সঙ্গে নিয়ে মেয়রের কাছে গিয়েছিলেন ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদ। তদন্তকারীদের কথায়, ২০১৪ সালে ইকবালের সঙ্গে মেয়রের ঘরে গিয়েছিলেন ম্যাথু। সে দিন মেয়রের অ্যান্টিচেম্বারে ম্যাথু, শোভনবাবু, ইকবাল ও অম্লানবাবু হাজির ছিলেন। সম্পাদিত ফুটেজ অনুযায়ী ওই ঘরে ম্যাথুর কাছ থেকে চার লক্ষ টাকা নেন শোভন। ফুটেজ অনুযায়ী, ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার পরে তা একটি তোয়ালেতে মুড়ে তুলে রাখেন মেয়র। এ দিন পুরসভায় ইকবাল অবশ্য হাজির ছিলেন না।

সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, অসম্পাদিত ফুটেজ অনুযায়ী অফিসে টাকা নেওয়ার পর ফের ম্যাথুকে তাঁর নিজের বেহালার বাড়িতে আসতে অনুরোধ করেন মেয়র। ম্যাথুর বয়ান অনুযায়ী বেহালার বাড়িতেও গিয়েছিলেন তিনি। সিবিআই জানিয়েছে, পরে মেয়র তাঁর কাছ থেকে আরও এক লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন বলেও ম্যাথু তাদের জানিয়েছেন। অভিযোগ, নির্বাচনের পরে কলকাতা পুরসভা এলাকায় নানা কাজের বরাত দেওয়া এবং মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও ম্যাথুর যোগাযোগ করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন শোভনবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন