Narayan Debnath

Narayan Debnath Death: নারায়ণ দেবনাথ প্রয়াত, রেখে গেলেন হাঁদা, ভোঁদা, বাঁটুল, নন্টে, ফন্টে, কেল্টুদের

২৪ ডিসেম্বর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১৬ জানুয়ারি দেওয়া হয় ভেন্টিলেশনে। মঙ্গলবার সকালে প্রয়াত হন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২২ ১০:৫৫
Share:

বাড়ি ফেরা হল না বাঙালির কিশোরবেলার সঙ্গী নারায়ণ দেবনাথের। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ। ফাইল ছবি।

বাংলা চিত্রকাহিনি বা কমিকসের প্রাণপুরুষ নারায়ণ দেবনাথের জীবনাবসান। বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। কয়েক প্রজন্মের বাঙালি কিশোরবেলার সঙ্গী হয়ে রয়েছে তাঁর সৃষ্টি করা একের পর এক চরিত্র। সেই হাঁদা, ভোঁদা, বাঁটুল, নন্টে, ফন্টে, কেল্টুদের রেখে চলে গেলেন স্রষ্টা নারায়ণ।

গত ২৪ ডিসেম্বর তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার মিন্টো পার্কের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ফুসফুস থেকে শুরু করে কিডনির সমস্যা বাড়ছিল। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমছিল। অবস্থার বিপজ্জনক অবনতি হওয়ায় ১৬ জানুয়ারি তাঁকে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়। সেখান থেকে আর ফেরা হল না। মঙ্গলবার সকাল সওয়া ১০টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন তিনি। বিকেলে হাওড়ার শিবপুর শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এই শিবপুরেই তাঁর জন্ম, বড় হওয়া। এখানেই আজীবন কাটিয়েছেন তিনি।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে খবর, সকাল থেকেই হৃদ্‌যন্ত্রে গুরুতর সমস্যা হচ্ছিল প্রবীণ শিল্পীর। অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। রক্তচাপও দ্রুত ওঠানামা করছিল। সব ধরনের চেষ্টা চালান চিকিৎসকেরা। কিন্তু চিকিৎসায় আর সাড়া দেননি নারায়ণ দেবনাথ। এই সময় তাঁর শিবপুরের বাড়ির লোকজনকে খবর দেওয়া হয়।

বয়সজনিত নানা সমস্যায় তিনি কয়েক বছর ধরেই ভুগছিলেন। এর আগেও একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল শিল্পীকে। চিকিৎসার ভার নিয়েছিল রাজ্য সরকার। তৈরি হয়েছিল চিকিৎসকদের একটি আলাদা দল।

Advertisement

দেবনাথ পরিবারের আদি নিবাস অধুনা বাংলাদেশে। নারায়ণ দেবনাথের জন্মের কিছু দিন আগে তাঁর পরিবার শিবপুরে চলে আসে। সেখানে ১৯২৫ সালে তাঁর জন্ম। অল্প বয়স থেকেই শিল্পের প্রতি ঝোঁক ছিল। বাড়িতে অলঙ্কার তৈরির চল ছিল। ছোট থেকই গয়নার নকশা তৈরি করতেন নারায়ণ দেবনাথ। স্কুলের পাঠ চুকিয়ে তিনি আর্ট কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ডামাডোলে বন্ধ হয়ে যায় আর্ট কলেজে পড়া। তার পর কয়েকটি বিজ্ঞাপন সংস্থার হয়ে কাজ করেন।

১৯৬২ সাল থেকে প্রকাশিত হতে থাকে তাঁর হাঁদা-ভোঁদার চিত্রকাহিনি।

নারায়ণ দেবনাথের প্রয়াণে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘বিশিষ্ট শিশুসাহিত্যশিল্পী ও কার্টুনিস্ট নারায়ণ দেবনাথের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। বাঁটুল দি গ্রেট, হাঁদা ভোঁদা, নন্টে ফন্টে, বাহাদুর বেড়াল প্রভৃতি চরিত্রের স্রষ্টা নারায়ণ দেবনাথ সব বয়সের পাঠকের মনে চিরস্থায়ী আসন লাভ করেছেন।… আমি নারায়ণ দেবনাথের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

নন্টে ফন্টের প্রথম প্রকাশ ১৯৬৯ সালে। তার আগেই চলে এসেছে বাঁটুল দি গ্রেট।

নারায়ণ দেবনাথের অমর সৃষ্টি ‘বাটুল দি গ্রেট’, ‘হাঁদা ভোঁদা’, ‘নন্টে ফন্টে’, ‘বাহাদুর বেড়াল’ প্রভৃতি। ২০১৩-য় তাঁকে সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার এবং বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ২০২১ সালে পান পদ্মশ্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন