Narendra Modi

বিনামূল্যে বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ, ভোটের আগে কেন্দ্রের নতুন প্রকল্পে অনলাইনে আবেদন, কারা পাবেন এমন সুযোগ?

অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের পরেই ২২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নিজের সঙ্কল্প ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানিয়েছিলেন, তিনি চান সকলের বাড়িতে সৌরবিদ্যুৎ থাকুক। এ বার কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সূচনা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:০০
Share:

রামমন্দির উদ্বোধনের দিনেই এমন ভাবনা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

লোকসভা নির্বাচন দোরগোড়ায়। তার আগে বাড়ি বাড়ি বিনামূল্যে বিদ্যুতের নতুন প্রকল্পের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার এই প্রকল্পের সূচনা হলেও গত ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের দিনেই এমন প্রকল্পের ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন মোদী। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী সূর্য ঘর: মুফত বিজলি যোজনা’। মঙ্গলবার প্রকল্প সূচনার কথা জানিয়ে মোদী এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে এক কোটি বাড়িতে বিনামূল্যে প্রতি মাস ৩০০ ইউনিট বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। এর জন্য ৭৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করা হবে।’’ কেন্দ্রের দাবি, এই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের আয় বাড়বে, কমবে বিদ্যুতের বিল এবং বাড়বে চাকরির সংস্থান।

Advertisement

প্রসঙ্গত রামমন্দির উদ্বোধনের পরে পরেই এক্স হ্যান্ডেলে মোদী লিখেছিলেন, ‘‘পৃথিবীর সমস্ত ভক্ত সর্বদা সূর্যবংশী ভগবান শ্রীরামের আলো থেকে শক্তি পান। আজ অযোধ্যায় প্রাণপ্রতিষ্ঠার শুভক্ষণে আমার এই সঙ্কল্প আরও দৃঢ় হয়েছে যে, ভারতবাসীর বাড়ির ছাদে তাদের নিজস্ব সোলার সিস্টেম থাকুক। অযোধ্যা থেকে ফিরে আসার পরে আমি প্রথম যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা হল আমাদের সরকার ১ কোটি বাড়িতে ছাদে সোলার ব্যবস্থা বসানোর লক্ষ্য নিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রী সূর্যোদয় যোজনা’ চালু করবে। এর ফলে গরিব ও মধ্যবিত্তের বিদ্যুৎ বিল তো কম হবেই সেই সঙ্গে ভারত বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরও হবে।’’

‘প্রধানমন্ত্রী সূর্যোদয় যোজনা’ নামে প্রকল্প আগেই ছিল কেন্দ্রের। এ বার নতুন প্রকল্প ‘প্রধানমন্ত্রী সূর্য ঘর: মুফত বিজলি যোজনা’। এই প্রকল্পে এক কোটি বাড়ির ছাদে বসানো হবে সোলার প্যানেল। বিশেষ করে দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের বাসিন্দারা যাতে সৌরশক্তি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ পেতে পারেন সেই জন্যই এই প্রকল্প বলে দাবি কেন্দ্রের।

Advertisement

কেন্দ্রের যা পরিকল্পনা তাতে এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সরকার ভর্তুকি দেবে। সেই টাকা সরাসরি উপভোক্তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করবে কেন্দ্র। এর জন্য আবেদন করতে জাতীয় স্তরের একটি অনলাইন পোর্টাল চালু করেছে কেন্দ্র। সেখানেই আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণও মিলবে। সে ব্যবস্থাও কেন্দ্র করবে। কেন্দ্র চাইছে, পুরসভা বা পঞ্চায়েতও এই প্রকল্পের প্রচার করুক যাতে সবার ঘরে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা হতে পারে।

আবেদন করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের pmsuryaghar.gov.in ওয়েবসাইটে যেতে হবে। সেখানে ছ’দফায় আবেদন। প্রথম দফায়, নিজের রাজ্য পছন্দ করে কোন সংস্থার বিদ্যুৎ পরিষেবার সংযোগ বাড়িতে রয়েছে তা জানাতে হবে। এর পরে দিতে হবে বিদ্যুৎসংস্থার গ্রাহক (কনজিউমার) নম্বর। সেই সঙ্গে গ্রাহকের ফোন নম্বর এবং মেল আইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। দ্বিতীয় দফায়, গ্রাহক নম্বর ও ফোন নম্বর দিয়ে লগইন করে ছাদে সোলার প্যানেল বসানোর আবেদন করতে হবে। এর জন্য অনলাইনেই ফর্ম ভরতে হবে।

তৃতীয় দফায় যে সব সংস্থা বাড়ি বাড়ি সোলার প্যানেল বসায় তাদেরও রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা রয়েছে ‘ডিসকম’ পোর্টালে। গ্রাহকদের ‘ডিসকম’-এর তালিকাভুক্তদের থেকে বেছে নিতে হবে কোন সংস্থা বাড়িতে সোলার প্যানেল বসাবে। সেই পর্ব মিটে গেলে বসবে প্যানেল। চতুর্থ দফায়, বিস্তারিত জানিয়ে মিটারের জন্য আবেদন করতে হবে। এর পরে পঞ্চম দফায় মিটার বসানোর পরে ‘ডিসকম’-এর প্রতিনিধিরা পর্যবেক্ষণ করে একটি সার্টিফিকেট দেবে। একেবারে শেষে ষষ্ঠ দফায় গ্রাহককে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য এবং ক্যানসেলড চেক পোর্টালের মাধ্যমেই জমা দিতে হবে। এর ৩০ দিনের মধ্যে কেন্দ্রের তরফে টাকা আসবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।

বাড়িতে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা হয়ে গেলে একগুচ্ছ সুবিধা মিলবে বলে কেন্দ্র মনে করছে। বছরে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা খরচ কমবে। নিজেরা বাড়িতে ব্যবহারের পাশাপাশি বিদ্যুৎ পরিষেবা দেয় এমন সংস্থাকে বিক্রিও করে যাবে। বৈদ্যুতিন গাড়িতে চার্জ দেওয়া যাবে। বাড়ি বাড়ি সোলার প্যানেল বসানোর কাজে অনেক কর্মসংস্থান হবে। পরবর্তী কালে রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও কর্মসংস্থান হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন