১৬ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ছবি পিটিআই।
জল্পনা চলছিল জোরদার। বাংলায় নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের জনসভার পরিকল্পনার বিষয়ে মুরলীধর সেন লেন সূত্রে নানা তথ্য একে একে সামনে আসছিল। তবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মিলছিল না। রথযাত্রা শুরুর দু’দিন আগে অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করল বিজেপি। ১৬ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে জনসভা করছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী— বুধবার জানিয়ে দিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
রথযাত্রা তথা ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’র জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক অনুমতি বিজেপি এখনও পায়নি। মাসখানেক আগেই পুলিশ-প্রশাসনকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছিল, কিন্তু প্রশাসনের তরফে কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি বলে দিলীপ ঘোষ জানান। এই টালবাহানার অভিযোগ রাজ্যপালের সামনে আগেই তুলে ধরা হয়েছিল বিজেপির তরফে। এ বার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন দিলীপবাবুরা। বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে দিলীপ ঘোষ নিজেই সে কথা জানিয়েছেন।
এক মাসে আগেই অনুমতি চাওয়া হয়েছে, তা সত্ত্বেও অনুমতি কেন এখনও মেলেনি? হাইকোর্ট এ দিন সরকারি আইনজীবীকে এই প্রশ্নই করেছে বলে দিলীপবাবু জানান। রাজ্য বিজেপির সভাপতির দাবি, আদালতের প্রশ্নের সদুত্তর সরকারি আইনজীবীর কাছে ছিল না। অনুমতি না দিয়ে প্রশাসন ভুল কিছু করেনি— এমন তত্ত্ব আদালতে এ দিন প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিল সরকার। দাবি বিজেপি নেতাদের। কিন্তু বিজেপি যে কর্মসূচি নিয়েছে, তার জন্য অনুমতি পাওয়া তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার— আদালত এমনই জানিয়ে দেয় বলে বিজেপির তরফে এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে জানানো হয়েছে। বিষয়টির নিষ্পত্তি অবশ্য বুধবার হয়নি। বৃহস্পতিবার ফের শুনানি হবে।
আরও পড়ুন: পাল্টা সম্মেলন রমেনদের, আইএনটিইউসি-তে এখন দুই সভাপতি
দিলীপ ঘোষের অভিযোগ, শুধু অনুমতি আটকে রেখেই ক্ষান্ত হয়নি তৃণমূল, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রথযাত্রার প্রচারে বেরনো বিজেপি কর্মীদের আক্রমণ করেছে, দেওয়াল লিখনে বা ফ্লেক্স-ব্যানার টাঙানোয় বাধা দেওয়া হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর কোচবিহার, ৯ ডিসেম্বর সাগর এবং ১৪ ডিসেম্বর তারাপীঠ থেকে তিনটি আলাদা আলাদা রথের যাত্রার শুরু হওয়ার কথা। প্রত্যেকটি যাত্রার সূচনাই করবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ— আনুষ্ঠানিক ভাবে এ দিন ঘোষণা করেছেন দিলীপ। অমিত শাহের সঙ্গে তিনটি রথের সূচনায় ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব থাকবেন। যাত্রা চলাকালীন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী রমন সিংহ এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস বাংলায় সভা করতে আসবেন। আর তিনটি রথই পথে নেমে পড়ার ঠিক দু’দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যে আসছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। দিলীপ বলেন, ‘‘৪০ দিন ধরে গোটা বাংলায় এই যাত্রা চলবে। যাত্রা চলাকালীন বাংলায় তিনটি জনসভা করবেন মোদীজি। তার মধ্যে একটি কর্মসূচি নির্দিষ্ট হয়ে গিয়েছে। শিলিগুড়িতে ১৬ ডিসেম্বর নরেন্দ্র মোদী সভা করছেন, এটা নিশ্চিত।’’ আরও দু’দিনে অন্য দুই প্রান্তে সভা করার কথা রয়েছে মোদীর, সে বিষয়ে রাজ্য বিজেপির তরফ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তাবও চলে গিয়েছে দিল্লিতে। সবুজ সঙ্কেত এলেই ওই দুই সভার তারিখ এবং স্থানও ঘোষণা করা হবে বলে দিলীপ ঘোষ জানান।
আরও পড়ুন: আর চাইবে না, এলাকায় যাও, বিধায়কদের ধমক মমতার
শুধু মোদী অবশ্য নন, অমিত শাহের জনসভার বিষয়েও প্রস্তাব চলে গিয়েছে দিল্লিতে। তিনটি রথের সূচনায় উপস্থিত থাকছেন শাহ, এটা চূড়ান্ত। যাত্রা চলাকালীন আরও তিনটি জনসভা তিনি করবেন। সেগুলির স্থান-কাল এখনও চূড়ান্ত নয়।
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু জানিয়েছেন, ২৪ ডিসেম্বর দুর্গাপুরে এবং ১১ জানুয়ারি কৃষ্ণনগরে সভা করতে পারেন মোদী। সে ক্ষেত্রে অমিত শাহ সভা করবেন মালদহ, বাঁকুড়া এবং শ্রীরামপুরে।