নকশালবাড়ির জের, রাজারহাট ও চেতলা নিয়ে সতর্ক বিজেপি

নকশালবাড়ি অস্বস্তির কারণ হয়েছে। চেতলা এবং রাজারহাটে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য সতর্ক হল বিজেপি। চাপ বা প্রলোভনের মুখে তাঁরা তৃণমূলে চলে যাবেন না বলে প্রাথমিক আশ্বাসও মিলল দুই এলাকার বাসিন্দাদের তরফে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৭ ০৩:৪৯
Share:

সাক্ষাৎ: কল্পনা মণ্ডলের বাড়িতে লকেট চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার চেতলায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নকশালবাড়ি অস্বস্তির কারণ হয়েছে। চেতলা এবং রাজারহাটে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য সতর্ক হল বিজেপি। চাপ বা প্রলোভনের মুখে তাঁরা তৃণমূলে চলে যাবেন না বলে প্রাথমিক আশ্বাসও মিলল দুই এলাকার বাসিন্দাদের তরফে।

Advertisement

তিন দিনের বঙ্গ সফরে নকশালবাড়িতে মাহালি দম্পতির বাড়িতে পাত পেড়ে খেয়েছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এবং দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তার পরই ওই দম্পতি ‘নিখোঁজ’ হয়ে যান এবং বুধবার তৃণমূলে যোগ দেন তাঁরা। ওই সফরে চেতলার লকগেট সাইডিং বস্তি এবং রাজারহাটের গৌরাঙ্গনগরেও গিয়েছিলেন অমিত। ওই দুই জায়গাতেও স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়িতে খেয়েছিলেন। তাই মাহালি দম্পতির দলবদলের পরে চেতলা এবং গৌরাঙ্গনগরের ভবিষ্যৎ নিয়েও চিন্তা আছে বিজেপি শিবিরে। কিন্তু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চেতলার ওই বস্তি এবং রাজারহাটের গৌরাঙ্গনগর জানিয়ে দিয়েছে, সেখানে তৃণমূল সহজে দাঁত ফোটাতে পারবে না!

নকশালবাড়ির অভিজ্ঞতার পরে চেতলার ওই বস্তির মন বুঝতে বৃহস্পতিবার সকালে দলের সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়কে সেখানে পাঠিয়েছিল বিজেপি। অমিত যে দু’জনের বাড়িতে জল-মিষ্টি খেয়েছিলেন, সেই কল্পনা মণ্ডল এবং সন্ধ্যা বৈদ্যর বা়ড়িতেই এ দিন যান লকেট। জানতে চান, তৃণমূল তাঁদের ভয় দেখিয়েছে কি না। তাঁরা দু’জনেই বলেন, কেউ ভয় দেখায়নি। লকেট তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। কল্পনার বাড়িতে এ দিন লস্যি খেয়েছেন লকেট। সন্ধ্যার বাড়িতে খেয়েছেন রসগোল্লা, আম এবং লেবুর সরবত। কল্পনা এবং সন্ধ্যা বলেন, ‘‘আমরা বিজেপি-ই করব। তৃণমূলকে ভয় পাচ্ছি না।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: জেলে দিলে পাল্টা জেল: মমতা

গৌরাঙ্গনগরের সুকান্তপল্লীতে গীতা মণ্ডল, শর্মিষ্ঠা মণ্ডলের বাড়িতে খেয়েছিলেন অমিত। পরে কয়েক হাজার লোকের উপস্থিতিতে একটি সভাও হয় সেখানে। তিন দিনের মাথায় সেখানেই পাল্টা সভা করে তৃণমূল। তবে বিজেপি নেতা পীযূষ কানোরিয়ার দাবি, ‘‘গৌরাঙ্গনগর বিজেপি-র গড়। উত্তরবঙ্গে যেমন হয়েছে, তেমন রাজারহাটে হবে না।’’ ওই এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্য বিজেপি-র দীপা রায় এ দিন বলেন, ‘‘তৃণমূলের কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। শর্মিষ্ঠা বা গীতার সঙ্গেও কেউ যোগাযোগ করেননি। ভয় দেখানো কিংবা চাপ তৈরির প্রশ্নই ওঠে না।’’

নকশালবাড়ির ঘটনা নিয়ে দিলীপবাবু এ দিন সন্দেশখালিতে কটাক্ষ করেছেন, ‘‘শুনেছি, তিন লক্ষ টাকা এবং বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার টোপ দিয়ে নকশালবাড়ির পরিবারটিকে দলে টেনেছে তৃণমূল। আপনারা যদি কেউ তৃণমূলের থেকে এই সুযোগ পেতে চান, তা হলে আমাকে বাড়িতে নিমন্ত্রণ করুন। আমি অবশ্যই খেয়ে আসব!’’ মাহালি পরিবারকে তৃণমূলে যেতে বাধ্য করার জন্য নকশালবাড়ি থানার ওসি-র বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি-র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন