পাহাড়ে নানা জনগোষ্ঠীর জন্য একের পর এক উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার রাজ্যের সব তফসিলি জাতি ও উপজাতি এবং অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) উন্নয়ন পরিকল্পনাকে এক ছাতার তলায় আনতে নতুন উপদেষ্টা পরিষদ গড়তে চলেছে রাজ্য। যে পরিষদের চেয়ারপার্সন হবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।
বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনেই পেশ হতে চলেছে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল শিডিউলড কাস্টস অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল বিল, ২০১৭’। রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে এখন মোট জনসংখ্যার ২২.৮% তফসিলি শ্রেণিভুক্ত। ওই অংশের উন্নয়নের পরিকল্পনা আরও সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা প্রয়োজন। তফসিলি ও অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট অ্যাকশন প্ল্যানের পরিকল্পনা করে প্রস্তাবিত পরিষদ সরকারকে পরামর্শ দেবে। শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন এলাকার তফসিলিদের নানা অংশের সমস্যা সমাধানেও তারা প্রস্তাব দেবে। নজর দেওয়া হবে তফসিলি মানুষের পরম্পরাগত সংস্কৃতির (নাচ, গান-সহ) সংরক্ষণ ও বিকাশেও।
বিল অনুযায়ী, পদাধিকার বলে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রস্তাবিত পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান হবেন অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী। তফসিলি জাতি বা উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত কোনও লোকসভা আসন থেকে নির্বাচিত এক জন সাংসদ এবং সংরক্ষিত বিধানসভা আসন থেকেই নির্বাচিত সর্বাধিক ১০ জন পর্যন্ত বিধায়ক ওই পরিষদের সদস্য হবেন। তফসিলিদের নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদেরও পরিষদে সদস্য করে আনা হবে। তার বাইরেও কারও মতামত দরকার হলে চেয়ারপার্সন তাঁকে পরিষদের বৈঠকে আমন্ত্রণ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: লালুর পর নিশানায় মমতাই
নতুন কমিশন গড়ার পাশাপাশিই তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের এবং ওবিসি শ্রেণির জন্য দু’টি আলাদা উন্নয়ন ও অর্থ কমিশনকে এ বার মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দু’টি সংস্থাকে মিলিয়ে তৈরি হবে একটিই অভিন্ন কমিশন। আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হতে চলা অধিবেশনেই বিধানসভায় আনা হবে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল এসসি অ্যান্ড এসটি অ্যান্ড ওবিসি ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড ফিনান্স কর্পোরেশন বিল, ২০১৭’। পুরনো দু’টি কমিশন তৈরি হয়েছিল যে দুই আইন বলে, সেগুলি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে নতুন বিল পেশ করার সময়েই। এ ছ়াড়াও, এই অধিবেশনে একই দফতরের তরফে তৃতীয় আরও একটি বিল আসছে— ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল এসসি অ্যান্ড এসটি (আইডেন্টিফিকেশন) (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৭’। বিধাননগরের মহকুমা শাসকের কাছ থেকে যাতে জাতিগত শংসাপত্র পাওয়া যায়, সেই সংস্থান রেখে সংশোধন করা হচ্ছে পুরনো আইন। শংসাপত্র খারিজ বা প্রত্যাহার করে নেওয়া হলে স্ক্রুটিনি কমিটির বিবেচনার ক্ষেত্রে কী করণীয়, সেই সংক্রান্ত বিধিতেও কিছু রদবদল হচ্ছে।