আয়ুর্বেদ, যোগে পিএইচডি শুরু করার প্রস্তাব

দু’বছর আগেই পৃথক মন্ত্রক পেয়েছিল তারা। এ বার দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথির (আয়ুষ) গবেষণা শুরুর প্রস্তাব এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি।

Advertisement

মধুরিমা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:২৬
Share:

দু’বছর আগেই পৃথক মন্ত্রক পেয়েছিল তারা। এ বার দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথির (আয়ুষ) গবেষণা শুরুর প্রস্তাব এনেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি। বিজ্ঞপ্তি জারি করে ইউজিসি জানিয়েছে, আয়ুষ মন্ত্রক সম্প্রতি ওই পাঁচটি বিষয়ে পিএইচডি চালু করেছে। সেই কারণেই মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দেশের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে পড়ুয়াদের আয়ুর্বেদ, যোগ বা হোমিওপ্যাথি নিয়ে গবেষণার সুযোগ দিতে ইউজিসিকে অনুরোধ করা হয়েছে।

Advertisement

২০০৩ সালে ‘ইন্ডিয়ান সিস্টেম অফ মেডিসিন অ্যান্ড হোমিওপ্যাথি’ নামে শুরু হলেও পরে তা কিছুটা অদল বদল করে তৈরি হয় ‘আয়ুষ’ (আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি, সিদ্ধা ও হোমিওপ্যাথির সংক্ষিপ্ত নাম)। ২০১৪ সালে পৃথকভাবে গঠিত হয় আয়ুষ মন্ত্রক। উদ্দেশ্য, বিকল্প চিকিত্সাব্যবস্থার প্রসার ঘটানো। তার পরবর্তী কালে অ্যালোপ্যাথির চিকিত্সার সমান্তরালে হোমিওপ্যাথি বা যোগ ব্যায়ামকেও সমান ভাবে প্রচারে আনতেই এই নয়া উদ্যোগ বলে ইউজিসির দাবি।

ইউজিসি সূত্রের খবর, ভারতের এই প্রাচীন চিকিত্সা পদ্ধতির পড়াশোনার মান বাড়াতে সব রাজ্যে হোমিওপ্যাথি কলেজগুলোর উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। যে কারণে শুধু স্নাতক বা স্নাতকোত্তর নয়, এই বিষয়ে গবেষণার উপরেও জোর দিচ্ছে মন্ত্রক। ইউজিসি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, হোমিওপ্যাথি বা ইউনানি, যোগ বা আয়ুর্বেদের পড়ুয়ারা যাতে গবেষণার সুযোগ পান সেই জন্য পাঁচটি পৃথক কাউন্সিল বা সংস্থা তৈরি করেছে মন্ত্রক। আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথির জন্য ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ’-ও তৈরি করা হয়েছে। এই কাউন্সিল সারা দেশে গবেষণা সংক্রান্ত বিষয়টি দেখবে। এ ছাড়াও বিভিন্ন বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থার সঙ্গেও জোট বেঁধে কী ভাবে বিকল্প এই ওষুধ এবং চিকিত্সা ব্যবস্থার আরও প্রসার ঘটানো যায় তা-ও খতিয়ে দেখবে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিল।

Advertisement

ইউজিসি সূত্রের খবর, প্রতি বছর ২০০ জন পড়ুয়াকে স্কলারশিপ দেবে আয়ুষ মন্ত্রক। এঁদের মধ্যে স্নাতকোত্তরে যাঁরা আয়ুষের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছেন এমন ১২৫ জনকে এবং বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিভাগের ৭৫ জন পড়ুয়াকে এই ওই পাঁচটি বিষয়ে গবেষণা করার জন্য বৃত্তি দেবে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলগুলি। এই রাজ্যে আয়ুষের প্রাক্তন মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আয়ুষের লক্ষ্যই ছিল সারা দেশে হোমিওপ্যাথ এবং আয়ুর্বেদিক চিকিত্সার প্রচার ঘটানো। পাশাপাশি বিভিন্ন ওষধি গাছের ব্যবহারের পরিধি বৃদ্ধি করার লক্ষ্য রয়েছে। ‘‘এই বিকল্প চিকিত্সা বিজ্ঞান নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন, যার জন্য দেশের বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়েও এই পঠনপাঠন শুরু হওয়া দরকার’’, মন্তব্য আশিসবাবুর।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিমধ্যেই আয়ুষের সাহায্যপ্রাপ্ত বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করছেন পড়ুয়ারা। উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘ফিজিক্যাল এডুকেশনে যোগ পড়ানো হয়, ফার্মাসি বিভাগেও আয়ুষের নানা প্রকল্পের কাজ হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে পিএইচডির বিষয়ে ইউজিসির এই অনুরোধ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি।’’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ও এ বিষয়ে পিএইচডি শুরুর কথা ভাবছে না। উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের এখনই এই পিএইচডি শুরুর পরিকাঠামো নেই। তবে বিকল্প এই চিকিত্সার বৈজ্ঞানিক দিকগুলো নিয়ে গবেষণার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন