দার্জিলিঙে পুরসভায় অনাস্থা

বিনয়পন্থী মোর্চার সধারণ সম্পাদক অনীত থাপার দাবি, ৭-৮ জন কাউন্সিলর দলছুট হলেও বাকিদের জোর করিয়ে চিঠিতে সই করানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০৪:২৮
Share:

বিক্ষোভ: বজগাইকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র

দার্জিলিং লোকসভা এবং বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপি জোটের জয়ের পরই পাহাড়ে শুরু শিবির বদল। দার্জিলিং পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে বুধবার চিঠি দিয়েছেন ১৭ জন কাউন্সিলর। ৩২ আসন বিশিষ্ট ওই পুরসভার এক কাউন্সিলর ২০১৭ সালে গণ্ডগোল শুরুর পরপরই ইস্তফা দিয়েছিলেন। পরে পুরসভাটি বিনয় তামাংপন্থীদের দখলে আসে। এ দিন ১৭ কাউন্সিলর নিজেদের বিমলপন্থী বলে দাবি করায় পুরসভা হাতবদল হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা। তাঁদের চিঠিতে আইন মেনে দ্রুত সভা ডেকে চেয়ারপার্সনকে সরানোর দাবি তুলেছেন ওই ১৭ জন।

Advertisement

যদিও বিনয়পন্থী মোর্চার সধারণ সম্পাদক অনীত থাপার দাবি, ৭-৮ জন কাউন্সিলর দলছুট হলেও বাকিদের জোর করিয়ে চিঠিতে সই করানো হয়েছে। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সাগর তামাং বলেন, ‘‘ওরা পরিস্থিতি অশান্ত করে কিছু কাউন্সিলরকে নিয়ে দার্জিলিঙের উন্নয়নের কাজে বাধা তৈরি করতে চাইছে। শেষ পর্যন্ত বোর্ড আমাদের দখলেই থাকবে।’’

লোকসভা ভোটের আগে দলের নেতা ও পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার নমন রাইকে বিনয়পন্থী মোর্চা থেকে বহিষ্কার করা হয়। নমনের নেতৃত্বেই এ দিন পুরসভায় গিয়ে অনাস্থার চিঠি দেন অন্য কাউন্সিলররা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন বিমলপন্থী মোর্চার মুখপাত্র বিপি বজগাই-সহ অন্য নেতারা।

Advertisement

চিঠি নেওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন পুরসভার চেয়ারপার্সন প্রতিভা রাই। ২০১৭-তে গণ্ডগোলের শুরুর পরই প্রতিবাদে কাউন্সিলর পদ ছেড়েছিলেন রাম গোলে। মোর্চা সূত্রের খবর, দার্জিলিঙের মতো কার্শিয়াং, কালিম্পং ও মিরিক পুরসভার কিছু কাউন্সিলরের সঙ্গেও ইতিমধ্যেই বৈঠক হয়েছে বিমল শিবিরের নেতাদের।

ওই পুরসভাগুলিতে অনাস্থা ঠেকাতে তাই তৎপর হয়েছে বিনয় শিবির। বুধবারই কালিম্পংয়ে গিয়ে দলের কাউন্সিলর, নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অনীত থাপা। বৈঠকে দলের কিছু নেতার কাজকর্মে প্রকাশ্যেই অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলেই বিনয়পন্থী মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে। ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণের জন্য কয়েক দিন আগে বিনয়পন্থী মোর্চার কালিম্পং জেলা কমিটি মিটিং ডেকেছিল। তবে সেই মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ৪ জন। ফলে কোনও আলোচনাই হয়নি। এ দিন অনীতের সামনে সেই প্রসঙ্গ তুলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন কয়েক জন নেতা। অনীত বলেন, ‘‘দলে কোনও ক্ষোভ নেই। কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। যে সব কাউন্সিলরের স্বাক্ষরসহ চিঠি দার্জিলিং পুরসভায় জমা দেওয়া তাঁরা সকলেই বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে নেই। তবে কয়েক জন যেতে পারে।’’

যদিও অনীতের দাবিকে হাস্যকর বলেছেন বিমলপন্থী মোর্চার কার্যকারি সভাপতি লোপসাং লামা। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ের চারটি পুরসভাই আমাদের দখলে আসবে। এত দিন ভয় দেখিয়া কাউন্সিলরদের নিজেদের পক্ষে রেখেছিল বিনয় শিবির। এবার তাঁরা ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন।’’

নমন বলেন, ‘‘এখন পর্যন্ত আমরা ১৭ জন আছি। কয়েক দিনের মধ্যে আরও কয়েকজন আমাদের পক্ষে যোগ দেবে। বিনয় শিবিরের নেতারা বুঝতে পেরেছে সব কিছু ওদের হাত থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। তাই উল্টো পাল্টা দাবি করছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন