দুর্ঘটনায় আহত ডানকুনির যুবক সঞ্জয় রায়ের চিকিৎসার জন্য অ্যাপোলো হাসপাতাল জোর করে টাকা আদায় করতে চাইছিল কিনা, পুলিশি তদন্তের অভিমুখ এখন সেই দিকেই ঘুরছে বলে লালবাজারের খবর।
ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা এবং বিল সংক্রান্ত নথি খতিয়ে দেখার পর তদন্তকারীদের মনে হয়েছে, সঞ্জয়ের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন নয় এমন অনেক কিছুই বিলে জোড়া হয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বকেয়া বিল আদায়ের জন্য সঞ্জয়ের পরিবারকে ফিক্সড ডিপোজিটের নথি জমা দিতে বাধ্য করার যে অভিযোগ উঠেছে, তাতেও জোর করে টাকা আদায়ের বিষয়টি পরিষ্কার হচ্ছে। আর তদন্তের অভিমুখ সেই দিকে ঘোরায় অ্যাপোলোর যে সব কর্মী-অফিসার বিল তৈরির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের একাধিকবার জেরা করা হচ্ছে। বিলিং বিভাগের এক কর্তাকে তিন দিন ধরে জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। বুধবারও তাঁকে ফুলবাগান থানায় ডাকা হয়েছিল। তদন্তকারীদের কারও কারও দাবি, বিলে যে সব অসঙ্গতি ছিল তার কোনও ব্যাখ্যাই দিতে পারেননি ওই কর্তা।
লালবাজার সূত্রের খবর, সঞ্জয়ের ম়ৃত্যুর পরে ওই হাসপাতাল ও তার সঙ্গে যুক্ত এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল তাঁর পরিবার। হাসপাতালে বাজেয়াপ্ত করা ৬৫০ পাতার নথি খতিয়ে দেখে সঞ্জয়ের চিকিৎসায় যুক্ত ১৪ জন চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তদন্তকারীরা বুধবার ওই হাসপাতালের দুই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেন। স্বাস্থ্য দফতরের গড়া দ্বিতীয় তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আজ, বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ভবনে জমা পড়বে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী এ দিন জানান, তদন্তের কাজ প্রায় শেষ। বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে তাঁরা রিপোর্ট হাতে পাবেন। তার পর তা পৌঁছবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। সঞ্জয়ের মৃত্যুর ক্ষেত্রে চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল কি না, থাকলেও তা কী ধরনের, ইচ্ছাকৃত ভাবে সঞ্জয়ের পরিবারকে ভুল বোঝানো হয়েছিল কি না, সবই ওই রিপোর্টে স্পষ্ট হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।