মাথায় নেই কেউ, বহু সরকারি স্কুলে মার খাচ্ছে পাঠ

সরকারি স্কুলশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু জানান, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং প্রাতঃ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের পদ খালি থাকায় পঠনপাঠনের খুবই অসুবিধা হচ্ছে।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০৪:১৫
Share:

নিয়মিত পঠনপাঠন ও বিদ্যায়তনের প্রশাসনিক কাজকর্মে তাঁদের অভাব মালুম হচ্ছে রোজই। বিশেষত মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক-সহ বিভিন্ন পরীক্ষার সময়ে সরকারি স্কুলে প্রধান শিক্ষক বা সহকারী প্রধান শিক্ষক না-থাকাটা ঘোরতর সমস্যার সৃষ্টি করছে।

Advertisement

রাজ্যের অনেক সরকারি স্কুলেই প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ মাসের পর মাস ফাঁকা পড়ে রয়েছে। বেশ কিছু সরকারি স্কুলে প্রাতঃ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের পদও শূন্য। রাজ্যে এখন সরকারি স্কুলের সংখ্যা ৩৯। তার মধ্যে এই মূহূর্তে চারটিরও বেশি স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং প্রাতঃ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের পদ ফাঁকা রয়েছে অন্তত ২২টি।

সরকারি স্কুলশিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু জানান, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং প্রাতঃ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের পদ খালি থাকায় পঠনপাঠনের খুবই অসুবিধা হচ্ছে। দায়িত্বের নিরিখে প্রধান শিক্ষকের পরেই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ সহকারী প্রধান শিক্ষকের। রুটিন তৈরি থেকে শুরু করে অনুপস্থিত শিক্ষকদের ক্লাস কারা নেবেন— সবই ঠিক করেন তাঁরা।

Advertisement

শিক্ষা শিবির সূত্রের খবর, স্কুলের দৈনন্দিন কাজ চালানোর সঙ্গে রয়েছে বড় পরীক্ষা সামলানোর দায়িত্ব। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন সরকারি স্কুলগুলিকে প্রধান কেন্দ্র করা হয়। সেন্টার ইনচার্জ হন সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সেন্টার সেক্রেটারি হন সহকারী প্রধান শিক্ষক। অধিকাংশ স্কুলেই এই দু’টি পদ ফাঁকা থাকায় অন্য শিক্ষকদের দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। আর প্রাতঃ বিভাগে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের হাতেই ওই বিভাগের পুরো দায়িত্ব ন্যস্ত থাকে। অথচ সেখানে কোনও কোনও পদ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে খালি পড়ে রয়েছে।

এই মুহূর্তে প্রধান শিক্ষক নেই বারাসত প্যারীচরণ সরকার সরকারি হাইস্কুল, বিধাননগর সরকারি স্কুল, কল্যাণী বিধানচন্দ্র মেমোরিয়াল সরকারি গার্লস স্কুল এবং জলপাইগুড়ি জেলা স্কুলে। সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং প্রাতঃ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক— দু’টি পদই খালি, এমন স্কুলের তালিকায় আছে হিন্দু স্কুল, হাওড়া জিলা স্কুল, সাখাওয়াত মেমোরিয়াল সরকারি গার্লস স্কুল। সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুল, আলিপুর মাল্টিপারপাস সরকারি গার্লস স্কুল এবং কল্যাণী বিধানচন্দ্র মেমোরিয়াল সরকারি গার্লস স্কুলের মতো স্কুলে। প্রাতঃ বিভাগে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক নেই, এমন সরকারি স্কুলের তালিকায় রয়েছে বালিগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল, উত্তরপাড়া সরকারি হাইস্কুল।

সরকারি স্কুলশিক্ষক সমিতির তরফে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হয় পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে। বিষয়টি সময়সাপেক্ষ। আর সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং প্রাতঃ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের পদ পূরণের ক্ষেত্রে বদলি প্রথার ভূমিকা বিরাট। কিন্তু বদলির ক্ষেত্রে শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা স্বজন পোষণ করেন বলে বারবার অভিযোগ ওঠে। সৌগতবাবু জানান, বদলি নীতি যাতে যথাযথ ভাবে মেনে চলা হয়, শিক্ষামন্ত্রীকে তার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন