পরিদর্শন: চালসার বাংলোর সামনে পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। —নিজস্ব চিত্র।
চালসার ব্রিটিশ আমলের ‘হেরিটেজ বাংলো’র হাল ফেরাতে সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। কিন্তু, কী ভাবে, কী হচ্ছে বুঝতে গিয়ে অপরিচ্ছন্ন ঘরদোর, শৌচাগার, কাজের গয়ংগচ্ছ গতি দেখে আঁতকে উঠলেন রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
চালসা বাংলোর চত্বরে দাঁড়িয়ে পযর্টকদের সঙ্গেও কথা বলে সেখানে ইঞ্জিনিয়রদের ডেকে পূর্তমন্ত্রী বলে দিলেন, ‘‘ঢিমেতালে কাজ মুখ্যমন্ত্রী পছন্দ করেন না। এটা মাথায় রেখে কাজে আরও গতি আনুন। সংস্কারের কাজ যত দ্রুত সম্ভব সম্পূর্ণ করুন।’’
ওই বাংলোর যে দেড় বিঘা জমি ফাঁকা পড়ে, সেখানে একটি বড় অতিথি নিবাস তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়ার নির্দেশও মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন। পাহাড়-নদীর মাঝের ওই ফাঁকা জায়গায় ১২টি স্যুইট তৈরির প্রকল্পেও সবুজ সঙ্কেত মিলেছে বলে জানান মন্ত্রী। পূর্ত দফতরের জলপাইগুড়ি সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়র সুব্রত হাইতকে সম্প্রতি সমস্ত পরিকল্পনা, নকশার খসড়া নিয়ে কলকাতায় পূর্ত ভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করার নির্দেশও দেন অরূপবাবু।
হেরিটেজ বাংলোর সংস্কার ও নতুন ভবন তৈরির খবরে পর্যটন মহল খুশি। কারণ, চালসায় থাকার মতো বেশি জায়গা নেই। বিলাসবহুল রিসর্ট একটি রয়েছে। পূর্ত দফতরের কাঠের সুদৃশ্য ‘হেরিটেজ বাংলো’টি ১৯১৭ সালের। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জীর্ণ। বিষয়টি জানতে পেরে মুখ্যমন্ত্রী তা দ্রুত সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
তৃণমূলের তরফে অরূপবাবুই পাহাড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত। সম্প্রতি পাহাড়ে পুরভোটের প্রচারের ফাঁকে আচমকাই ডুয়ার্সে পূর্ত দফতরের বাংলোর হাল-হকিকত দেখতে বেরিয়ে পড়েন। সেই সময়ে চালসায় হাজির হন। সেখানে কলকাতা থেকে যাওয়া কলকাতার পর্যটকদের সঙ্গেও কথাবার্তা বলেন তিনি।
প্রায় ৫ বিঘার উপরে চালসার পূর্ত দফতরের হেরিটেজ বাংলো। পাশে একটি ৮ কক্ষের দোতলা ভবন রয়েছে। সেখানে গিয়ে দেখেন, স্যাঁৎসেতে দেওয়ালে ছাতা পড়ে গিয়েছে। শৌচাগারে দুর্গন্ধ। রান্নাঘরে ঝুলকালিতে তেলচিটে দেওয়ালে অন্ধকারে অবাধে ঘুরছে আরশোলা। ভবনের বাইরেও ইতিউতি আগাছার ঝোপ। এর পরেই সুপারিনটেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়রকে ডেকে বিরক্তি প্রকাশ করেন তিনি। পাশের ফাঁকা জায়গায় কয়েক কোটি টাকায় নতুন অতিথি নিবাস তৈরির নির্দেশও দেন। তিনি জানান, দ্রুত তা তৈরি করে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে। ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘চালসায় পর্যটন পরিকাঠামো এখনও ভাল নয়। সারা বছর চালসায় বুকিংয়ের জন্য খোঁজ নেন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা। নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে সেই চাহিদা অনেকটা পূরণ হতে পারে।’’