সারদা-সহ অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির মামলায় সিবিআইয়ের কাজে হস্তক্ষেপ করা যাবে না বলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
সারদায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে সম্প্রতি তলব করে সিবিআই। তার পাল্টা হিসেবে সিবিআইয়ের অফিসারকে ডেকে পাঠানো এবং সিবিআইয়ের স্পেশাল ডিরেক্টরের কাছে কলকাতা পুলিশের এক সাব-ইনস্পেক্টরের ই-মেল পাঠিয়ে জবাবদিহি চাওয়া। সেই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই শুক্রবার শীর্ষ আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে বলে শুক্রবার সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।
ডিসেম্বরের ২ তারিখে সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে অভিযোগ করে, রাজীব কুমারকে ডেকে পাঠানোর ঘটনার পাল্টা হিসাবেই কলকাতা পুলিশ এটা করেছে। আর্জি জানায়, বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার মামলায় রাজ্যের পুলিশ যেন সিবিআইয়ের কাজে নাক না-গলায়।
শুক্রবার সিবিআইয়ের প্রধান আইনজীবী কে রাঘবচারিলু জানিয়েছেন, এ দিনই সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি আর এন মিশ্র এবং এম এস গৌড়ার ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে— সারদা, রোজ ভ্যালি-সহ যত বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্ত সিবিআই করছে, সেই সব অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত কোনও মামলায় পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ সিবিআই অফিসারদের ডেকে জেরা করতে পারবে না। রাজ্য পুলিশের শীর্ষ কর্তার কাছে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে বলে রাঘবচারিলু জানিয়েছেন।
কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তাঁর মোবাইলে পাঠানো বার্তার জবাবও মেলেনি। শুক্রবার রাজ্য পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা
জানিয়েছেন, এখনও তাঁরা এমন কোনও নির্দেশ পাননি।
সিবিআই সূত্রের খবর, সারদা মামলায় রাজীব কুমারকে প্রথম সমন পাঠানো হয় ১৬ অগস্ট। চিঠি দিয়ে রাজীব জানান, ছট ও দুর্গাপুজোর জন্য ব্যস্ত থাকায় আসতে পারবেন না। পুজোর পরে ফের ২৩ নভেম্বর তাঁকে ডেকে পাঠানো হলেও তিনি যাননি।
ওই ২৩ নভেম্বরেই রোজ ভ্যালি মামলায় সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার ডিএসপি ব্রতীন ঘোষালকে ডেকে পাঠায় বালিগঞ্জ থানা। ৩ অগস্ট ওই থানা এলাকায় রোজ ভ্যালির ক্রোম হোটেলে একটি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় ব্রতীনবাবুকে ডেকে পাঠিয়ে ৩ ঘণ্টা জেরা করা হয়। সিবিআইয়ের দাবি, তদন্ত সংক্রান্ত বেশ কিছু সংবেদনশীল প্রশ্নও সে দিন ব্রতীনবাবুকে করা হয়। পরের দিন, ২৪ নভেম্বর বালিগঞ্জ থানার এক সাব-ইনস্পেক্টর সরাসরি সিবিআইয়ের যুগ্ম ডিরেক্টর এস কৃষ্ণ এবং স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকে ই-মেল করে ২০টি প্রশ্ন পাঠিয়ে জবাব চান।
রাঘবচারিলুর কথায়, স্পেশাল ডিরেক্টর পদের এক কর্তার নাম উল্লেখ করে এক সাব-ইনস্পেক্টর চিঠি পাঠানোর পরেও রাকেশ আস্থানা তাঁকে জবাবি ই-মেল করে জানান— কলকাতায় সিবিআইয়ের এসপি উপেন্দ্র অগ্রবালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। কিন্তু, তার পরেও ২৭ নভেম্বর দ্বিতীয় মেল করে ওই সাব ইনস্পেক্টর জানান, স্পেশাল ডিরেক্টরকেই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। আইনজীবী জানান, ‘‘তার পরেই সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’