Accident

Road Accident: কেউ সাহায্যে এগিয়ে এল না

তখনও বুঝতে পারিনি, কী ঘটে গিয়েছে আমাদের সঙ্গে। গলায় যতটুকু শক্তি ছিল, তা জড়ো করে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকি।

Advertisement

স্বপন মুহুরি

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৫৭
Share:

আহত স্বপন মুহুরি

গাড়িটা খুব জোরে চালাচ্ছিল। আমরা চালককে বারণও করি। কিন্তু শোনেননি। চালক মদও খেয়েছিলেন বলে মনে হয়।

Advertisement

সারা দিন প্রচুর ছোটাছুটি করায় শরীর ক্লান্ত ছিল। গাড়ির ডালায় হেলান দিয়ে বসে থাকতে-থাকতে এক সময়ে ঘুমিয়ে পড়ি। হঠাৎ প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে ঘুম ভেঙে গেল, সঙ্গে বীভৎস জোরে একটা শব্দ। আমি ছিটকে গিয়ে পড়লাম গাড়ির ভিতরে।

এক, দুই, তিন... কয়েক সেকেন্ড। গোটা গায়ে অসহ্য ব্যথা করছে। অন্ধকারে সে ভাবে কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

Advertisement

কোনও মতে ঘাড় তুলে দেখলাম, চার দিকে সবাই পড়ে আছে। কেউ চিৎকার করছে যন্ত্রণায়, কারও সেই শক্তিটুকুও নেই। গোঙানির শব্দ ক্রমাগত বাড়ছে। প্রথমে মাথা কাজ করছিল না। একটু পরেই বুঝতে পারলাম, ভয়ঙ্কর কিছু ঘটে গিয়েছে।

কোনও মতে শক্তি সঞ্চয় করে হাতড়াতে হাতড়াতে এগোলাম। অনেকের মধ্যে থেকে আমার নাতনিটাকে খুঁজে পেলাম। ওর সারা গায়ে রক্ত, শরীরটা যেন তখনই নিথর মনে হল। কোনও মতে ওকে বুকে তুলে নিলাম। এ বার মেয়ে আর বৌমার খোঁজ শুরু করি। ওদেরও পেলাম। কিন্তু সবাই রক্তাক্ত, অচৈতন্য।

তখনও বুঝতে পারিনি, কী ঘটে গিয়েছে আমাদের সঙ্গে। গলায় যতটুকু শক্তি ছিল, তা জড়ো করে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকি। গাড়ির বাইরে লোকের গলার আওয়াজ শুনতে পেলাম যেন..। সতর্ক কান। চিৎকার করে বলি, ‘‘সাহায্য করুন। অনেকে আটকে আছি এখানে।’’

প্রথমে অনুরোধ, তার পরে কাকুতি-মিনতি।

আমাদের বের করার জন্য। কিন্তু কেউ এগিয়ে এল না। শেষে পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে। আহতদের হাসপাতালে পাঠায়।

আহত, মৃত বৃদ্ধার ছোট ছেলে

দুর্ঘটনাস্থলে পড়ে মৃত শিশু অনন্যা মুহুরির জুতো। রবিবার হাঁসখালিতে। ছবি: সুস্মিত হালদার ২। মৃতদের দেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি। নদিয়ার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। ছবি: প্রণব দেবনাথ

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন