West Bengal Lottery

‘বন্ধ’ রাজ্য লটারির সঙ্গে গাঁটছড়ায় রাজি নয় কেউ

নতুন করে দরপত্র চেয়ে ফের সহযোগী সংস্থা খোঁজা হবে, না রাজ্য লটারির ব্যবসা আবার সরকার খুলবে, তা নিয়ে ভাবনা শুরু হয়েছিল।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ০৫:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

গত মার্চ থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল রাজ্য লটারি। ভিন‌্ রাজ্যের লটারি থেকে জিএসটি বাবদ যে রোজগার হচ্ছে, তা নিয়েই সন্তুষ্ট ছিল অর্থ দফতর। নবান্ন চেয়েছিল, দরপত্র হেঁকে নতুন সহযোগী নিয়ে রাজ্য লটারির খোলনলচে বদলে দেওয়া হবে। আরও শক্তিশালী করা হবে ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য লটারির’ ব্র্যান্ড। কিন্তু নবান্নের ডাকা দরপত্রে সাড়া দেয়নি কোনও সংস্থা। দেশে লটারির ব্যবসা করা ৮-৯টি সংস্থার কেউই রাজ্যের লটারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হতে আগ্রহী নয় বলে জেনেছে নবান্ন। যা নিয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছে সরকার।

Advertisement

নতুন করে দরপত্র চেয়ে ফের সহযোগী সংস্থা খোঁজা হবে, না রাজ্য লটারির ব্যবসা আবার সরকার খুলবে, তা নিয়ে ভাবনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনা ও লকডাউনের জেরে জোর ধাক্কা খেয়েছে লটারির বিক্রি। অর্থ দফতর এখনই তাই নতুন করে দরপত্র হেঁকে সহযোগী বাছাইয়ের পথে যেতে নারাজ। ফলে রাজ্যের লটারি ব্যবসার ‘মধু’ খেয়ে যাচ্ছে ভিন‌্ রাজ্যের লটারি কারবারিরা, জানাচ্ছেন অর্থ কর্তারা।

দফতরের এক কর্তা জানান, ‘‘অন্য রাজ্যের লটারি এ রাজ্যের ক্রেতাদের থেকে টাকা তুলে চলে যাচ্ছে। যদিও জিএসটি বাবদ কর মিলছে। কিন্তু যে আশায় রাজ্য লটারি সাময়িক বন্ধ করা হয়েছিল, তা ধাক্কা খেল। পেশাদার কোনও সংস্থা রাজ্য লটারির সঙ্গে যুক্ত হতে রাজি না হওয়াটা দুঃখের।’’

Advertisement

কেন কোনও সংস্থা এল না? কর্তারা জানাচ্ছেন, দরপত্রে নিদেনপক্ষে বছরে ২৫০ কোটি টাকা রাজস্ব সরকারকে দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছিল। তাতে লটারির কারবারিরা রাজি হচ্ছেন না।

লটারি ডাইরেক্টরেট সূত্রের খবর, সাপ্তাহিক লটারির জমানায় বছরে ৬৬ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি করে ১৭.৮১ কোটি টাকা নিট রাজস্ব পাওয়া যেত, সেখানে দৈনিক লটারি চালু করার পর রোজগার অনেক বেড়েছিল। ২০১৮-১৯ অর্থ বর্ষে এক হাজার কোটির বেশি টিকিট বিক্রি করে ২২৩ কোটি রোজগার করেছিল রাজ্য লটারি। ২০১৯-২০ অর্থ বর্ষে ৩০০ কোটি রোজগারের পথ তৈরি হয়েছিল। তার মধ্যেই রাজ্য লটারি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

২০১৭-১৮ পর্যন্ত ৪৮টি সাপ্তাহিক এবং ছ’টি বাম্পার লটারি খেলা চালাত রাজ্য সরকার। বঙ্গলক্ষ্মী সুপার ১২টি, বঙ্গভূমি সুপার ১২টি এবং বঙ্গলক্ষ্মী নামে ২৪টি সাপ্তাহিক খেলা হত। সেই সঙ্গে দীপাবলী, রথযাত্রার মতো উৎসবে এক কোটি টাকা পুরস্কার মূল্যের বাম্পার লটারি হত। সাপ্তাহিক লটারির টিকিটের দাম ছিল ২ টাকা, ও ৫ টাকা। বাম্পার সিরিজ়ের ১০ টাকা।

কিন্তু ২০১৮ এর মে থেকে প্রতিদিনই খেলা হচ্ছে রাজ্য লটারির। শুধু গাঁধী জয়ন্তী, স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবস বাদ দিয়ে। সোমবার বঙ্গলক্ষ্মী-তিস্তা, মঙ্গলবার বঙ্গলক্ষ্মী-তোর্সা, বুধবার বঙ্গলক্ষ্মী-রায়ডাক, বৃহস্পতিবার বঙ্গভূমি-ভাগীরথি, শুক্রবার বঙ্গভূমি-অজয়, শনিবার বঙ্গশ্রী-দামোদর এবং রবিবার বঙ্গশ্রী-ইছামতী নামে সাতটি খেলা চলে। তার সঙ্গে থাকছে ছ’টি বাম্পার লটারি। সরকারি কর্তারা জানাচ্ছেন, ১৪ মে থেকে প্রতিদিন ৩০ লক্ষ টিকিট ছাড়া হচ্ছিল। চাহিদা বাড়ছে দেখে সেই বছর ২৯ অক্টোবর থেকে প্রতিদিন তিন কোটি টিকিট বাজারে ছাড়া হচ্ছে। টিকিটের দাম বাড়িয়ে ছ’টাকা করা হয়েছিল। বাম্পার সিরিজের টিকিটের দামও বেড়ে হয়েছিল ২০ টাকা। এখন সে সব আর নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন