CPM

প্রার্থীই নেই তৃণমূলে, দাসপুরের সমবায়ে বিজেপির সঙ্গে লড়াই করে নিরঙ্কুশ বাম

পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক সমবায়ে বাম-বিজেপির বোঝাপড়া শোরগোল ফেলেছে। সেখানে কয়েকটিতে তৃণমূল হারলেও বেশিরভাগ সমবায়েই জয়ী হয়েছে রাজ্যের শাসক দল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দাসপুর শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৫:১৬
Share:

১২টি আসনের সব কটিতেই জিতেছেন সিপিএম সমর্থিতরা। ফাইল চিত্র।

এলাকার বিধায়ক তৃণমূলের। সবকটি পঞ্চায়েতে ক্ষমতাসীন শাসকদল। এমনকি তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বাড়িও অদূরেই। অথচ পশ্চিম মেদিনীপুরের সেই দাসপুর-২ ব্লকের একটি সমবায়ে একটি আসনেও লড়ল না তৃণমূল। লড়াই হল বাম বনাম বিজেপির। আর ভোট শেষে দাসপুরের কাশীনাথপুর সমবায়ে নিরঙ্কুশ জয় পেল বামেরা। ১২টি আসনের সব কটিতেই জিতেছেন সিপিএম সমর্থিতরা।

Advertisement

পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক সমবায়ে বাম-বিজেপির বোঝাপড়া শোরগোল ফেলেছে। সেখানে কয়েকটিতে তৃণমূল হারলেও বেশিরভাগ সমবায়েই জয়ী হয়েছে রাজ্যের শাসক দল। অথচ পাশের জেলার এই সমবায়ে সমীকরণ একেবারে উল্টো।

রবিবার ছিল দাসপুর-২ ব্লকের খুকুড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশীনাথপুর সমবায় সমিতির পরিচালন কমিটির নির্বাচন। এখানে ভোটাধিকার শুধু সমবায়ের সদস্যদেরই। সেই মতো ভোটার ছিলেন প্রায় সাড়ে ন’শো। বছর সাতেক আগে শেষ ভোট হয়েছিল এই সমবায়ে। তখনও বামেরাই জিতেছিল। এ বার তিনটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতেন সিপিএম সমর্থিতরা। এ দিন ভোট হয় ৯টি আসনে। কোনও আসনেই তৃণমূল প্রার্থী না থাকায় মুখোমুখি ছিলেন সিপিএম ও বিজেপি সমর্থিতরা। ফলপ্রকাশের পরে দেখা যায় সব কটি আসনেই সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীরা জিতেছেন।

Advertisement

কাশীনাথপুরে তিনটি সংসদ। একটি তৃণমূলের ও দু’টি সিপিএমের দখলে রয়েছে। এলাকায় সিপিএমের সংগঠন বেশ পোক্ত। স্থানীয় খুকুড়দহ পঞ্চায়েত অবশ্য তৃণমূলেরই দখলে। দাসপুরের বিধায়কও তৃণমূলের। দলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইতের বাড়ি এখানে। আর কাশীপুরের সমবায় থেকে কিছুটা দূরেই থাকেন তৃণমূলের দাসপুর-২ ব্লক সভাপতি সৌমিত্র সিংহ রায়। সেখানে একটাও আসনে কেন প্রার্থী দিল না রাজ্যের শাসকদল?

তৃণমূল নেতৃত্ব এক্ষেত্রে ‘দুর্বলতা’ মানছেন। দলের ব্লক সভাপতি সৌমিত্র সিংহ রায়ের স্বীকারোক্তি, “ওই সমবায়ে তৃণমূলের কোনও ভোটার নেই। তাই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি আমরা।” স্থানীয় বিজেপি নেতা প্রশান্ত বেরার আবার ব্যাখ্যা, “প্রার্থী দিলে তৃণমূল হারত। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তার প্রভাব পড়বে এলাকায়। সেই আশঙ্কায় ওরা ভোটে অংশ নেয়নি।”

উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগেই এই সমবায়ের পরিচালন সমিতির মেয়াদ ফুরিয়েছিল। তারপর প্রশাসনিক বোর্ড সমবায় পরিচালনা করছিল। সম্প্রতি নির্বাচনের আর্জি নিয়ে বামেরা হাই কোর্টে যায়। হাই কোর্টের নির্দেশেই ভোট প্রক্রিয়া শুরু হয়। তারপর এমন বড় জয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত বাম শিবির। সিপিএমের এরিয়া কমিটির সদস্য কল্যাণ বেরা বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই নির্বাচন ছিল সেমিফাইনাল। আমরা চেয়েছিলাম সবপক্ষ লড়ুক। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী দিতে না পারলে আমরা আর কী করব!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন