মদনমোহন মন্দিরে ভিড়। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
রাসমেলা চত্বরে সুখটান দিতে গিয়ে জরিমানার মুখে পড়লেন ১১ জন ‘ধূমপায়ী’। শুক্রবার মেলার উদ্বোধনের রাতেই স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ দলের কর্মীরা মেলা চত্বরের বিভিন্ন এলাকায় হাতেনাতে তঁদের ধরেন। তার জেরেই প্রত্যেককে ২০০ টাকা করে আর্থিক জরিমানা করা হয়।
গোটা ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন পড়েছে শহরে। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, এ বার আগেভাগেই রাসমেলা চত্বরকে ‘নো-স্মোকিং জোন’ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই মতো প্রথম দিন থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়। ২০৫ বছরের প্রাচীন রাসমেলায় ধূমপানের জেরে জরিমানার ঘটনা আগে হয়নি। কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “রাসমেলায় ধূমপান বন্ধে কড়া নজর রাখা হয়েছে। অ্যান্টি স্মোকিং অ্যাক্ট অনুযায়ী প্রথম দিন ১১ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিদিন নজরদারি চলবে। ধরা পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, গত ১ জুলাই কোচবিহারে সিগারেট ও তামাকজাত পণ্য সামগ্রী প্রতিরোধক আইন লাগু করে প্রকাশ্যে জনবহুল এলাকায় ধূমপান বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। প্রথম দিন কোচবিহার জেলা হাসপাতাল চত্বরে দু’জন বাসিন্দা সিগারেট ধরিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে জরিমানা দেন। পরে বিক্ষিপ্তভাবে অভিযান চালিয়েও আর্থিক জরিমানা আদায় হয়। তবে একসঙ্গে এত জনকে জরিমানার ঘটনা হয়নি। কোচবিহারের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ২ বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “নিয়ম চালুর পর থেকেই বিক্ষিপ্তভাবে জরিমানা করা হচ্ছে। একসঙ্গে একদিনে আগে সর্বাধিক সাত জনকে জরিমানা করা হয়। সেদিক থেকে রাসমেলায় একদিনে জরিমানার ওই সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দাঁড়িয়েছে।”
শুক্রবার রাসমেলার উদ্বোধন হলেও দোকানপাট সেভাবে বসেনি। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পর্ব মেটার পর রাতের দিকে ফাঁকাই ছিল মাঠ, লাগোয়া চত্বর। তাই অনেকেই ধূমপানের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি। কেউ আড্ডা দিতে গিয়ে সিগারেট ধরান, তো কেউ আবার চায়ের সঙ্গে সুখটান দেন। কয়েকজন নিজেদের কাজের তদারকির মধ্যেই সিগারেট ধরিয়েছিলেন। হাতেনাতে ধরা পড়ার পরেও কয়েকজন বিষয়টি গুরুত্ব দিতে চাইছিলেন না। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সকলেই জরিমানা দিতে বাধ্য হন। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘প্রথম রাতেই বেড়াল মারা একেই বলে। সিগারেট ধরিয়ে জরিমানার ওই ঘটনা জানাজানি হলে পরবর্তী দিনগুলিতে অনেকে ঝুঁকি নেবেন না।”