প্রতারিত: অ্যাকাউন্টেই স্পষ্ট অনলাইন শপিংয়ের লেনদেন। —নিজস্ব চিত্র।
আগামী মাসে বড় মেয়ের বিয়ে। তাই গত সপ্তাহে কেনাকেটা আর আত্মীয়দের নিমন্ত্রণ করতে শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা গিয়েছিলেন শিলিগুড়ি সেবক রোডের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের অফিসার রামপ্রসাদ মিস্ত্রি। সেখানে এটিএম থেকে টাকাও তোলেন। বাড়ি ফেরার পরে মঙ্গলবার এটিএমে অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখেন ৫০ হাজার টাকা কম! খোঁজখবরের পরে ওই অফিসার বৃহস্পতিবার বিকেলে ভক্তিনগর থানায় লিখিত অভিযোগ জানান। তাঁর অভিযোগ, প্রতারক চক্র অনলাইন শপিং আর ওয়েবসাইট তৈরির বিল মিটিয়েছে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকেই।
এডিসিপি (ডিডি) অরিন্দম সরকার বলেন, ‘‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগ হলে লেনদেন আটকানোর চেষ্টা করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে অনেকটা সময় পেরিয়ে গিয়েছে।’’ প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের কোনও এলাকা থেকে ওই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অনলাইনে লেনদেন করা হয়েছে।
শুধু রামপ্রসাদবাবুই নন, পুজোর সময় সপরিবার দক্ষিণবঙ্গ থেকে ডুয়ার্সে ঘুরতে আসা এক তৃণমূল নেতারও একই ভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়েছিল। সে ক্ষেত্রেও অনলাইন শপিং-এর মাধ্যমেই টাকা গায়েব করা হয়।
দুই মাইল লাগোয়া সরকারপাড়া রামপ্রসাদের বাড়ি। বড় মেয়ের বিয়ের কাজে তিনি ১০ মার্চ কলকাতা যান। পুলিশ সূত্রের খবর, সেখানে প্রথমে দু’হাজার ও পরে ছ’হাজার টাকা তোলেন তিনি। ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘পরদিন বাড়িতে ফিরে এটিএমে গিয়ে মাথা ঘুরে যায়। ছ’দফায় মোট ৪৬১৬৬ টাকা হাতানো হয়েছে। কাউকে পাসওয়ার্ড দিইনি, কোনও অনলাইন শপিং করিনি।’’
তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, কোনও ভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং এটিএমের তথ্য হাতিয়ে এমন প্রতারণা হয়ে থাকে।
তাঁদের বক্তব্য, এটিএমের ভিতরে টাকা তোলার সময় ঢুকে তা দেখে নেওয়া ছাড়াও সুযোগ বুঝে মোবাইলে ছবি তোলা হয়। অনেক ক্ষেত্রে টেলিফোন করে তথ্য হাতানো হয়। পরে ডুপ্লিকেট কার্ডে তা প্রিন্ট করা হয়। একে ‘স্কিমিং’ বলা হয়। এ ছাড়াও ফোন করে কার্ড ব্লকের ভয় দেখিয়ে পাসওয়ার্ড হাতানো হয়। বা কেউ যদি অসুরক্ষিত সাইটে গিয়ে নিজের তথ্য দেয়, তা হলেও একই বিপদ হতে পারে।
গত বছর লালবাজারের গোয়েন্দারা এমন একটি চক্রের হদিশ পেয়েছিলেন। রাজস্থান থেকে দলটি মূলত অপারেশন চালাচ্ছিল। রামপ্রসাদের ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, জাল মুম্বইয়েও ছড়ানো।