জখম: মারপিটে আহত হকাররা। নিজস্ব চিত্র
রেলের হকার এবং প্যান্ট্রিকারের কর্মীদের মধ্যে মারপিটে আহত হলেন ছ’জন। তাঁদের মধ্যে একজনের মাথায় ও থুতনিতে চোট রয়েছে। রবিবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ এনজেপি স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের ঘটনা। বিবেক এক্সপ্রেসের প্যান্ট্রিকার থেকে হকারদের শরীরে গরম জল ছেটানোর অভিযোগও উঠেছে। সোমবার এনজেপি রেল পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন হকাররা। প্যান্ট্রি ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে বড় আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা।
শিলিগুড়ি রেল পুলিশ সুপার আন্নাপ্পা ই বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ ট্রেনটি কন্যাকুমারীর দিকে চলে যাওয়ায় অভিযুক্ত প্যান্ট্রিকারের কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। রেল চত্বরেই এরকম ঘটনার অভিযোগ উঠলেও এখনও রেলের তরফে বিষয়টি নিয়ে আলাদা করে তদন্ত শুরু হয়নি। এনজেপির এডিআরএম পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এখনও কোনও অভিযোগ এখনও জমা পড়েনি।’’
ঘটনার সূত্রপাত্র দলগাঁও স্টেশনের কাছে। অভিযোগ, ডাউন ডিব্রুগড়-কন্যাকুমারী বিবেক এক্সপ্রেসের প্যান্ট্রি সার্ভিসের কর্মীরা সুরিন্দর সিংহ নামে এনজেপির এক হকারকে জল বিক্রি করতে বাধা দেন। তা নিয়ে বচসা হলে সুরিন্দরকে রান্নার খুন্তি দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। চলন্ত ট্রেনে রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানেরাও ওই হকারকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার কথা এনজেপিতে তৃণমূলের হকার সংগঠনের ইউনিয়ন অফিসে জানান সুরিন্দর। ট্রেনটি রাত সাড়ে এগোরাটা নাগাদ এনজেপি ঢুকলে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত জাতীয়তাবাদী রেল হকার্স ইউনিয়নের নেতা গোপাল দাস সহ কয়েকজন ঘটনার প্রতিবাদ শুরু করেন।
তখনই বচসা থেকে উত্তেজনা ছড়ায়। গোপাল দাস, কালু শর্মা, গোপাল দেবনাথ, উজ্জ্বল দাস, বিমল সরকার, সুরিন্দর সিংহকে শাবল এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে প্যান্ট্রিকারের রেলকর্মীরা মারধর করে বলে অভিযোগ। মারপিটের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্টেশনে চত্ত্বরে। যাত্রীরা ভয়ে দৌড়াদৌড়িও শুরু করে দেন। অভিযোগ হকারদের মারধর করার পরে ট্রেনে উঠে প্যান্ট্রিকারের দরজা বন্ধ করে দেন অভিযুক্তরা। পরে অবশ্য রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানরা এসে পরিস্থিতি সামাল দেন।
মারপিটে মোট ৬ জন হকার আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গোপাল দেবনাথের মাথায় ও থুতনিতে ৬টি সেলাই পড়েছে। তাঁর চারটি দাঁতও পড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। রাতেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নিয়ে গেলে চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। হকার নেতা গোপাল দাসের অভিযোগ, ‘‘প্যান্ট্রিকারে সব কর্মীই মদ্যপ অবস্থায় ছিল। ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে।’’