Fox

শেয়ালের সঙ্গে লড়ে জখম ছাত্রী

ক্তাক্ত অবস্থায় বছর এগারোর খুদে পড়ুয়াকে স্থানীয় খাসপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৯:৩৭
Share:

সাহসী: শেয়ালের সঙ্গে লড়াইয়ে পায়ে আঘাত পায় দিশা। নিজস্ব চিত্র

সাত সকালে পিছন থেকে আচমকা হানা দিয়ে পায়ে কামড় বসাল শেয়াল। জখম পা নিয়েই সেই শেয়ালের সঙ্গে প্রায় ১০ মিনিট ধরে একাই লড়ল পঞ্চম শ্রেণির দিশা সরকার। শেষে গলা চেপে ধরে লাথি মারলে রণে ভঙ্গ দিয়ে পালায় শেয়ালটি। বৃহস্পতিবার বালুরঘাট ব্লকের দুর্লভপুরের বার্নিতলা এলাকার ঘটনা।

Advertisement

রক্তাক্ত অবস্থায় বছর এগারোর খুদে পড়ুয়াকে স্থানীয় খাসপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। খুদে পড়ুয়ার সাহসিকতায় প্রশংসায় এখন পঞ্চমুখ এলাকার মানুষ। কিন্তু একের পর এক শেয়ালের হামলা ও দৌরাত্ম্যে আতঙ্কিতও তাঁরা। বাসিন্দারা জানান, দিশাকে আক্রমণের আগে ওই দিন সকালেই গ্রামের আরও ৪ জন শিশু ও কিশোর শেয়ালের কামড়ে জখম হয়েছে। তারা বালুরঘাট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আত্রেয়ী নদীর ধারে দুর্লভপুর এলাকার বার্নিতলা গ্রামে পেশায় কৃষিজীবী দীপঙ্কর সরকারের বড় মেয়ে দিশা দুর্লভপুর প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। বৃহস্পতিবার ঘটনার সময় দীপঙ্কর বাড়িতে ছিলেন না। দিশার বছর চারেকের ছোট বোনকে নিয়ে মা শিউলি ঘরে ছিলেন।

Advertisement

শুক্রবার ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে শিউলি বলেন, ‘‘তখন সকাল ৮টা বাজে। দিশা বাড়ির দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল। সে সময় পিছন থেকে শেয়ালটি আচমকা ওকে আক্রমণ করে। ডান পায়ে কামড় বসিয়ে দেয়। রক্তাক্ত হয়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে শেয়ালটির মুখোমুখি হয়ে হামলা ঠেকাতে থাকে দিশা। ফের ওকে কামড়াতে গেলে শেয়ালের গলা চেপে ধরে ও।’’ শেয়ালটিকে লাথি মেরে চিৎকার করলে লাঠি হাতে ছুটে যান শিউলিও। তখন দিশাকে ছেড়ে পালায় শেয়ালটি। তিনি জানান, পালানোর সময়ও পাশের একটি রেশন দোকানের সামনে বসে থাকা এক ব্যক্তির উপরে হামলা চালিয়ে সেটি জঙ্গলে গা ঢাকা দেয়।

গ্রামবাসীরা জানান, দিশাকে আক্রমণের আগে শেয়ালটি এলাকার আরও চার জন শিশু ও কিশোরকে জখম করে। ঘটনায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, সন্ধে হতেই শেয়ালের অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে। জানলা ও দরজা দিয়ে কেবলই তারা ঘরে ঢোকার চেষ্টা করে। কয়েক দিন হল দিনের বেলাতেও শেয়ালের দৌরাত্ম্য বেড়ে গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে শিশুরা শেয়ালকে কুকুরের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলায় বিপদ আরও বেড়েছে।

এলাকায় ব্যাপক হারে শেয়াল বেড়ে যাওয়ায় বনদফতরের সহায়তা দাবি করেন দুর্লভপুর, বার্নিতলার পাশাপাশি দেবীপুর, সোদপুরের বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, গত কয়েক দিনে শেয়ালের হামলায় ৬ জন গ্রামবাসী জখম হন। এ দিন বনদফরের রেঞ্জার আব্দুর রেজ্জাক বলেন ‘‘এলাকায় গিয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন