Thief

কাল হল নিজস্বী তুলে! একেবারে শ্রীঘরে চোর

জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, “গত রবিবার ওই তরুণ মোবাইলে সিম ভরতেই সেই তথ্য আমাদের কাছে চলে আসে। চুরি যাওয়া মোবাইলগুলির মধ্যে একটিতে ব্যবসায়ী ফেসবুক ভরে রেখেছিলেন। মোবাইল চোর ভুল করে সেই অ্যাকাউন্টেই নিজের ছবি আপলোড করে দেয়। তারপর চোরের অবস্থান পেতে আর দেরি হয়নি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৮ ০৩:০৭
Share:

পাকড়াও: থানায় ঘূর্ণি। নিজস্ব চিত্র

চুরি করা মোবাইলে হিন্দি সিনেমা দেখে দিব্যি সময় কাটছিল ঘূর্ণির। কাল হল তার নিজস্বী তুলে! তাও নিজস্বী নিজের বন্ধুদের দেখানো পর্যন্তও ঠিক ছিল। শেষে সেই ছবি ফেসবুকে দিতে গিয়েই পুলিশের ফাঁদে পড়ে গেল ঘূর্ণি। আপাতত শ্রীঘরে ঠাঁই হয়েছে তার!

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি শহরের ডিবিসি রোডের একটি দোকানে গত বৃহস্পতিবার রাতে তিনটে দামি মোবাইল ফোন চুরি যায়। পরে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় দেখা যায়, মুখঢাকা এক তরুণ চুরি করছে। তদন্তে নেমে অবশ্য দুষ্কৃতীর কোনও খোঁজ পায়নি পুলিশ। তবে ওই মোবাইলগুলোর আইইএমআই নম্বরে নজরদারি চালাচ্ছিল পুলিশ।

এদিকে, স্থানীয় বৈশাখী মেলায় গিয়ে চুরি করা মোবাইলে নিজস্বী তোলে বছর উনিশের ঘূর্ণি। তারপর সে সেই ছবি সবাইকে দেখায়। সব কিছু ভুলে মোবাইলে সিমকার্ড ভরে সেই ছবি পোস্ট করে ফেসবুকে। এ দিকে, ফোনে সিমকার্ড ভরতেই চোরাই মোবাইলের হদিস পেয়ে যান জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার কর্তব্যরত আধিকারিকরা। সোমবার রাতে মেলা থেকে ঘূর্ণিকে ধরে হাজতে ভরেছে পুলিশ।

Advertisement

জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, “গত রবিবার ওই তরুণ মোবাইলে সিম ভরতেই সেই তথ্য আমাদের কাছে চলে আসে। চুরি যাওয়া মোবাইলগুলির মধ্যে একটিতে ব্যবসায়ী ফেসবুক ভরে রেখেছিলেন। মোবাইল চোর ভুল করে সেই অ্যাকাউন্টেই নিজের ছবি আপলোড করে দেয়। তারপর চোরের অবস্থান পেতে আর দেরি হয়নি।’’

ধূপগুড়ির বাসিন্দা ঘুর্ণির ভাল নাম দীপক রায়। বেঁটেখাটো চেহারার ঘূর্ণির দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা। তার পরেই ছোটখাটো কাজ জুটিয়ে নেয় সে। সেই সঙ্গে তৈরি হয় মোবাইলের নেশা। মোবাইলে হিন্দি সিনেমা দেখা আর নিজস্বী তুলতে তার ভাল লাগে বলে পুলিশকে জানিয়েছে সে। এর আগে মাস ছয়েক আগে ধূপগুড়ি থেকে আরও একটি মোবাইল চুরি করেছিল সে। তাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টও ছিল। কিন্তু ধরা পড়ার পরে সে মোবাইল থানায় জমা দেয়। মোবাইল চুরি করতেই গত বৃহস্পতিবার রাতে সে জলপাইগুড়ি এসেছিল বলে কবুল করেছে পুলিশের কাছে।

এদিন ঘূর্ণি নিজেই বলেন, “রাতে দরজা ভেঙে মোবাইলের দোকানে ঢুকি। সারারাত বৃষ্টি হচ্ছিল। দোকানে বসেই মোবাইলে সিনেমা দেখি। ভোর হওয়ার আগে তিনটে মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যাই।“ পরে শিলিগুড়িতে গিয়ে সে দোসর করে মাসতুতো ভাইকে। যদিও পুলিশের দাবি, ঘূর্ণির মাসতুতো ভাই চুরি করা মোবাইলের বিষয়ে কিছুই জানত না। গত রবিবার শিলিগুড়ির নৌকাঘাটে মেলায় দু’জনে ঘুরে ছবি তোলে। সেই ছবি পোস্ট করে দেয় ফেসবুকে।

পুলিশ এ দিন আদালতে পাঠিয়েছে ঘূর্ণিকে। নিজের ভুল মানছে সে। বলছে, “মোবাইলে ফেসবুক দেখে আমি ছবি দিয়ে দিয়েছি। সেটি যে অন্য কারও অ্যাকাউন্ট বুঝব কী করে।” আফশোস করে বলছে, “কেন যে মরতে সেলফি তুললাম!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন