কুয়ো থেকে মিলল বধূর দেহ

পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে উদ্ধার হল পাঁচ মাসের অন্তঃসত্বা এক বধূর বস্তাবন্দি মৃতদেহ। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের মোথাবাড়ি ফাঁড়ির আমলিতলা গ্রামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৬ ০২:৪২
Share:

নামানো হচ্ছে বস্তাবন্দি দেহ। —নিজস্ব চিত্র।

পরিত্যক্ত কুয়ো থেকে উদ্ধার হল পাঁচ মাসের অন্তঃসত্বা এক বধূর বস্তাবন্দি মৃতদেহ। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের মোথাবাড়ি ফাঁড়ির আমলিতলা গ্রামে।

Advertisement

খুনের পর ওই মহিলাকে বস্তাবন্দি করে কুয়োতে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের লোকেরা। ঘটনার পর থেকে বেপাত্তা রয়েছে মৃতার স্বামী। এ দিনই দুপুরে মোথাবাড়ি ফাঁড়িতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার পরিবারের লোকেরা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম রসিদা বিবি (২২)। স্বামীর নাম হাসান আলি। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত স্বামীর খোঁজে তল্লাশি চলছে। এই ঘটনায় একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’’

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর খানেক আগে কালিয়াচক থানার অচিনটোলা গ্রামের বাসিন্দা আইনুল শেখের মেয়ে রসিদার সঙ্গে বিয়ে হয় মোথাবাড়ির আমলিতলার হাসান আলির। হাসান রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। অচিনটোলাতে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়েই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় রসিদার। বাড়ির অমতেই দু’জনে বিয়ে করেন বলে অভিযোগ। পরিবারের লোকেরা মেনে না নেওয়ায় গ্রামেই অন্যত্র বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন তাঁরা। রসিদা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্বা ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পর থেকেই তাঁরা সেনাউল শেখ নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।

Advertisement

এ দিন সকালে সেনাউলের বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত কুয়োর মধ্যে রক্তমাখা প্ল্যাস্টিকের বস্তা দেখতে পান গ্রামবাসীরা। মোথাবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলার গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। গলার নলি কেটে ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।

পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই রসিদার উপরে অত্যাচার চালাত হাসান। হাসানের অন্য মহিলার সঙ্গে অবৈধ সর্ম্পক ছিল। সেই সর্ম্পকের প্রতিবাদ করায় মহিলাকে মারধর করা হত। মৃতার বাবা আইনুল শেখ বলেন, ‘‘আমার মেয়েকে গলার নলি কেটে খুন করা হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই জামাই হাসান অত্যাচার চালাতেন। জামাই এর অন্য মহিলার সঙ্গে সর্ম্পক ছিল। যার জন্য আমার মেয়েকে খুন করে বস্তার মধ্যে ঢুকিয়ে কুয়োতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।’’

হাসানেরা তিন ভাই। প্রত্যেকেই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য ইউনিস আলি বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। পুলিশকে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করার কথা বলা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বাড়ির মালিক সেনাউল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। পুলিশের জেরায় সেনাউল জানিয়েছেন, তাঁরা সপরিবারের আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরতে গিয়েছিলেন। এদিনই বাড়ি ফিরে ঘটনাটি জানতে পেরেছেন। তাই কী হয়েছিল তা তিনি জানেন না। পুলিশ জানিয়েছে, হাসানের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন