বার্তা: কোচবিহারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও পার্থপ্রতিম রায়। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
লোকসভা নির্বাচনের মুখে দলে ঐক্য ফেরাতে কার্যত যুব সংগঠনকেই কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার কোচবিহারে রাসমেলার মাঠে দলের জনসভায় যোগ দেন যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা দলের তরফে কোচবিহারের পর্যবেক্ষক অভিষেক। এ বারেই ছিল কোচবিহারে তাঁর প্রথম জনসভা। সেখানে তিনি কী বলেন তা নিয়ে উৎসাহ ছিল সবার। প্রায় দশ মিনিট ধরে তিনি দ্বন্দ্ব থামাতে দাওয়াই দেন। এটা তাঁর শেষ বারের মতো হুঁশিয়ারি বলেও সতর্ক করেন।
অভিষেক বলেন, “একটা বটগাছ, তার যদি শাখা-প্রশাখা কেটে দেওয়া হয়, সেই গাছ শক্তিশালী হয় না। আবার একই সঙ্গে বটগাছের শিকড়ের সঙ্গে যদি আমি প্রতিযোগিতা করি তাহলেও কিন্তু ওই গাছ শক্তিশালী হয় না। যুব যুব-র কাজ করবে, মূল তৃণমূল মূল তৃণমূলের কাজ করবে, ছাত্র ছাত্রের কাজ করবে।” এরপরেই সতর্ক করার ঢঙে তিনি বলেন, “কিন্তু মাথায় রাখবেন আমি তৃণমুল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি, আমি বুক ঠুকে একটা কথা বলে যাচ্ছি, তৃণমূলের মূল সংগঠনকে বাদ দিয়ে কোনও শাখা-প্রশাখা প্রয়োজন নেই। আমার যে গাছ সেই গাছের শিকড়কেই যদি আমি দুর্বল করি, আমি শাখা-প্রশাখা নিয়ে কী করব?”
অভিযোগ, যুব ও মূল তৃণমূলের টানা দ্বন্দ্ব চলেছে কোচবিহারে। গিয়েছে একাধিক প্রাণ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সতর্কবার্তার পরেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। সে খবর যে অভিষেকের কাছে রয়েছে তা এ দিন বুঝিয়ে দেন তিনি। অভিষেক বলেন, “আমি বারে বারে বলেছি তৃণমূলের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কে বড় কে ছোট ওই করলে চলবে না। আমাদের দল একটাই। আকাশে যেমন একটি সূর্য। একটাই দল, একটাই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
নাম না করে বহিষ্কৃত তৃণমূল যুব নেতা নিশীথ প্রামাণিক প্রসঙ্গেও এ দিন স্পষ্ট বক্তব্য জানিয়ে দেন অভিষেক। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে দিনহাটার একটি বড় অংশে নৌকা ও হ্যারিকেন চিহ্ন নিয়ে মমতা ও অভিষেকের ছবি নিয়ে নিশীথবাবুর নেতৃত্বে নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হয়। সেই প্রসঙ্গ তুলেই এ দিন তিনি সতর্ক করে দেন। নিশীথবাবু প্রসঙ্গে তিনি নাম না করে বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে জানান, তাঁকে বার বার সতর্ক করার পরেও কাজ না হওয়ায় তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন সব পক্ষ। জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সঠিক নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দল এমন ভাবেই এগিয়ে চলবে।” যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “মূল দলের সঙ্গে আলোচনা করে ও সর্বভারতীয় সভাপতির নির্দেশেই সংগঠন এগিয়ে চলবে। আমাদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সহ-সভাপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “আরও আগে এই হুঁশিয়ারির প্রয়োজন ছিল।”