পুরনোদের প্রশংসায় অভিষেক

দলে যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না এই অভিযোগ তুলে তৃণমূলের কিছু পুরানো নেতা কিছু দিন আগে তৃণমূল বাঁচাও কমিটি নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:৩৯
Share:

নেতা: ধূপগুড়িতে জনসভায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। ছবি: রাজকুমার মোদক

দলের পুরানোদের ভুলে গেলে চলবে না৷ বরং তাদের সংবর্ধিত করুন৷ শুক্রবার ধূপগুড়িতে তৃণমূল যুব সমাবেশ থেকে দলের কর্মীদের এই বার্তাই দিলেন দলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ দলের নেতাদের তিনি মনে করিয়ে দেন, তাদের জন্যই আজ তৃণমূল শুধু ক্ষমতায় এসেছে তাই নন৷

Advertisement

দলে যোগ্য সম্মান পাচ্ছেন না এই অভিযোগ তুলে তৃণমূলের কিছু পুরানো নেতা কিছু দিন আগে তৃণমূল বাঁচাও কমিটি নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন৷ ওই সংগঠনের একটি অনুষ্ঠানকে ঘিরে ময়নাগুড়িতে আবার নতুন-পুরানোদের মধ্যে সংঘর্ষও দেখেছে মানুষ৷ কিন্তু রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নিজেদের ঘর গোছাতে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে এখন দলের অন্দরের নতুন-পুরানো বিভেদ মেটাতে তৎপর, তা এ দিন অভিষেকের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট৷

জেলা যুব তৃণমূলের তরফে এ দিনের সভার আয়োজন করা হয়েছিল। যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় এ দিন অভিষেককে জানান, তাঁরা সংগঠনে জেলার সব পুরোনো কর্মীদের ডেকে সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সব বুথ কমিটিতে এবার থেকে নবীন এবং প্রবীণ দুই কর্মীদেরই রাখা হবে বলে দাবি সৈকতবাবুর। এ দিনের সভায় ভিড় দেখে উচ্ছ্বসিত সৈকতবাবুর দাবি, ‘‘এই ভিড়ে কে নতুন কে পুরোনো, বাছা যাবে না। পুরোনোদের সরিয়ে দিলে এমন ভিড়ও থাকবে না। এই কথাটি অভিষেক বলতে চেয়েছেন। আমরা সেই মতোই পদক্ষেপ করব।’’

Advertisement

তিনি এ দিন বলেন, ‘‘অনেক মানুষই রয়েছেন যাঁরা জীবন ও রক্ত দিয়ে দল করে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় জোড়া ফুল ফুটিয়ে মা-মাটি-মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ আমি সেই সমস্ত বীর যোদ্ধা-কর্মীদের স্যালুট ও কুর্নিশ জানাই৷’’ এরপরই দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আজ যাঁরা নেতা বা জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের জন্য কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন, লক্ষ লক্ষ কর্মীরাই তাঁদের সেই সুযোগ করে দিয়েছেন৷’’ তাই দলের পুরানো দিনের যে প্রবীণ কর্মীরা বিনা লোভেই দল করছেন তাদের সংবর্ধনা দেওয়ার কথা বলেন অভিষেক৷ অভিষেক বলেন, ‘‘এত দিন দলের জনপ্রতিনিধিরা অনেক সংবর্ধিত হয়েছেন৷ এ বার অঞ্চল ও বুথ স্তরে ওই ধরনের কর্মীদের খুজে বের করে নেতাদের তাঁদের সংবর্ধনা দিতে হবে৷ ২১ জুলাইয়ের সভার পরে থেকেই এই সংবর্ধনা শুরুর নির্দেশ দেন তিনি৷’’

জলপাইগুড়ি জেলায় তৃণমূলের অন্যতম প্রবীণ নেতা কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, ‘‘পুরোনো কর্মীরা অসম্মানিত হলে দলের স্বাস্থ্য কখনওই ভাল থাকবে না। তাই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’’ কিছু দিন আগে যাঁরা তৃণমূল বাঁচাও কমিটি গড়েছিলেন, তার আহ্বায়ক নয়ন দত্ত বলেন, ‘‘আমরা কোনও পদ চাইনি৷ দলের ভিতরে শুধু প্রাপ্য সম্মানটা চেয়েছিলাম৷’’

তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘অভিষেকবাবুর এই নির্দেশ আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব৷ বুথ সম্মেলন থেকেই এই সংবর্ধনা দেওয়া শুরু হবে৷’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন