পুজোর মেজাজে কাঁটা বৃষ্টিই

বাজার-ব্যস্ত দুপুরে নামল বৃষ্টি। যে ক’জন ক্রেতা ছিলেন তারাও বাড়ির পথে হাঁটা দিলেন। এমন দৃশ্য দেখা গেল ইসলামপুর-বালুরঘাটে। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়িতেও বিপর্যস্ত হয়েছে পুজোর বাজার। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারাও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪৬
Share:

আশঙ্কা: মণ্ডপ প্রায় শেষের মুখে। এসে গিয়েছে দেবী প্রতিমাও। বুধবার জল জমেছে বালুরঘাটের একটি মণ্ডপের সামনে। ছবি: অমিত মোহান্ত।

মহালয়ার দিনও বাজারে ভিড় নেই, অশনিসঙ্কেত দেখেছিলেন ব্যবসায়ীদের অনেকেই। কেউ আবার আশা করেছিলেন, আজ বুধবার থেকে ভিড় জমতে পারে। কেননা, মহালয়ায় রাতজেগে পিকনিক, বাজি পোড়ানো, ভোরে উঠে তর্পণের পরে অনেকেই দিনভর ছুটি কাটান। সেই আশায় জল ঢালল বৃষ্টি। বাজার-ব্যস্ত দুপুরে নামল বৃষ্টি। যে ক’জন ক্রেতা ছিলেন তারাও বাড়ির পথে হাঁটা দিলেন। এমন দৃশ্য দেখা গেল ইসলামপুর-বালুরঘাটে। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়িতেও বিপর্যস্ত হয়েছে পুজোর বাজার। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারাও।

Advertisement

উত্তর দিনাজপুর

Advertisement

বুধবার বেলা ১২টা থেকে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার ও হেমতাবাদে বৃষ্টি শুরু হয়। রাত পর্যন্ত কখনও ভারী আবার কখনও হাল্কা বৃষ্টি হয়েছে। এদিন সকাল থেকে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার ও হেমতাবাদের বিভিন্ন পোশাকের দোকানে পুজোর বাজার করার জন্য ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়লেও বৃষ্টি কিছুটা কমতেই দোকানগুলি ফাঁকা হয়ে যায়। রাত পর্যন্ত রায়গঞ্জের বেশিরভাগ দোকানে হাতেগোনা ক্রেতা দেখা গিয়েছে। রায়গঞ্জের নিউমার্কেট এলাকার পোশাক ব্যবসায়ী রঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘বন্যার জেরে এবছর বিভিন্ন ব্লকে চাষবাস ও বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। পুজোর মুখে এরকম চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা সাংঘাতিক লোকসানের শিকার হবেন।’’

ক্ষিণ দিনাজপুর

দুপুরের পর থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর জুড়ে আকাশ কালো করে ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় মণ্ডপসজ্জার কাজ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শহরের অভিযাত্রীর মণ্ডপে শোলা, থার্মোকল, তুলো দিয়ে তৈরি হচ্ছে বরফের পরিবেশে ভাস্কর্যের মণ্ডপ থেকে প্রতিমা। বৃষ্টিতে ভিজে একশা হয়ে গিয়েছে বালুরঘাটের বিগ বাজেটের পুজো প্রগতি সঙ্ঘ, বিবেকানন্দ পল্লি বারোয়ারী, দুর্গাবাড়ি ক্লাবের মন্ডপও। পুজোর মুখে বৃষ্টিতে পুজো উদ্যোক্তাদের মতো চিন্তিত ব্যবসায়ীরাও। হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা দিন। শাড়ি কাপড়ের দোকানে বিক্রেতাদের ভিড়ের আশায় আক্ষরিক অর্থে জল ঢেলে দিয়েছে বৃষ্টি।

কোচবিহার

রবিবার, সোমবার বাজার জমে উঠেছিল। ব্যবসায়ীরা আশা করেছিলেন, পুজোর দিন যত কাছে আসবে ভিড়ের রেকর্ড বাড়বে। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলেছে আবহাওয়া। জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক চাঁদমোহন সাহা বলেন, “আকাশের অবস্থা ভাল নয়। বৃষ্টি হচ্ছে মাঝে মাঝে। তাই বাজার জমেনি। আকাশ এমন থাকলে ব্যবসা পিছিয়ে যাবে।” অনেকেই জানান, যে কোনও সময় বৃষ্টির আশঙ্কা নিয়ে নতুন জামাকাপড় কিনতে যাওয়া ঝুঁকি। সে জন্যেই অনেকেই তাঁরা বাজারমুখী হয়নি।

মালদহ

বন্যায় ভেসে গিয়েছিল মালদহের একাংশ। মহানন্দা, ফুলহারের জল কমলেও এখনও ত্রাণ শিবিরেই রয়েছে বহু বানভাসি পরিবার। তার প্রভাব পড়েছে মৃৎশিল্পী থেকে শুরু করে মণ্ডপ প্রস্তুতকারক ও ব্যবসায়ীদের উপরে। তাঁদের দাবি, বন্যার জন্য শ্রমিক পেতে সমস্যা হওয়ায় ধীর গতিতে মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। পুজোর শেষ সপ্তাহে রাতদিন এক করে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছিল সমস্ত কিছুর। তবে বাধ সেধেছে বৃষ্টি। মঙ্গলবার রাত থেকে মালদহে দফায় দফায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে। যার জেরে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে মৃৎশিল্পী থেকে শুরু করে মণ্ডপ প্রস্তুতকারকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন