মাজিদের হামলাকারী অধরাই

‘আঁধার’  কাটেনি ৫ দিনেও

প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ থেকে স্পষ্ট, সব মিলিয়ে গোটা অপারেশনে সময় লেগেছে বড়জোর পাঁচ মিনিট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ০২:৫১
Share:

নার্সিংহোমে ভর্তি মাজিদ আনসারি

দিনের বেলা কলেজ ছাত্র মাজিদ আনসারিকে গুলি করার পরে কী ভাবে, কোথায় পালাল দুষ্কৃতীরা— তা নিয়ে ঘটনার পাঁচ দিন পরেও অন্ধকারে রয়েছে পুলিশ। পুলিশ দাবি করেছে, অভিযুক্তদের ধরতে চেষ্টায় কোনও খামতি রাখছে না তারা। মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন করে ইতিমধ্যেই তাদের আশ্রয়ের একটি সন্ধান পেয়েছে তারা। নির্দিষ্ট করে ঠিক কোন বাড়িতে তারা থাকতে পারে, তার খোঁজ চলছে। অভিযোগ অবশ্য উঠেছে, দুষ্কৃতীদের পেছনে প্রভাবশালী কেউ থাকায় পুলিশ সব জেনেও গড়িমসি করছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে টানা তল্লাশি চলছে। পুলিশ চুপ করে বসে নেই।”

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, গত শুক্রবার বিকাল ৪টে নাগাদ স্টেশন মোড়ের কাছে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার সময় হামলা হয় মাজিদ আনসারির উপরে। কোচবিহার কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাজিদ টিএমসিপির ওই কলেজে ইউনিটের আহ্বায়ক। অভিযুক্তরাও ওই কলেজেরই প্রাক্তন ছাত্র এবং টিএমসিপি কর্মী। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, মাজিদকে সেভেন্ট পয়েন্ট সিক্স এমএম পিস্তল থেকে গুলি করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকে জানিয়েছেন, ঘটনার সময় দুই রাউন্ড গুলি করা হয়। একটি গুলি শূন্যে হলেও পরেরটি মাজিদের পেটে লাগে। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ওই গুলি করা হয়। সে জন্য গুলি পেট ফুঁড়ে বেরিয়ে যায়। এক জন গুলি চালালেও অন্য আরও দু’জনের হাতেও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির একটি খোল উদ্ধার করে। যা থেকে তারা নিশ্চিত, ওই গুলি সেভেন পয়েন্ট সিক্স এমএমের।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ থেকে স্পষ্ট, সব মিলিয়ে গোটা অপারেশনে সময় লেগেছে বড়জোর পাঁচ মিনিট। পুলিশের ধারণা, ঘটনাস্থল থেকে দুটি পথ ধরে পালানোর সুযোগ রয়েছে। একটি অসমের দিকে, আর একটি দিনহাটার সীমান্ত এলাকা। যে এলাকা বর্তমানে অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল হয়েছে বলে অভিযোগ। দুটি সম্ভাবনাকে মাথায় রেখেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ জানতে পেরেছে, একটি বেনামি সিমকার্ডের মোবাইলের মাধ্যমে কোচবিহারের একাধিক লোকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে অভিযুক্তরা। সেই সূত্র ধরেই তাদের খোঁজার চেষ্টা হচ্ছে। মাজিদের পরিবারের বক্তব্য, ঘটনার পরে পালাতে বা কোচবিহার শহরের সীমানা ছাড়তে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। তা হলে এই সময়ের মধ্যে পুলিশ কেন তাদের পিছু নিল না?

Advertisement

মাজিদ টিএমসিপি কর্মী হওয়ার পরেও রবীন্দ্রনাথ ঘোষ খোঁজ নেননি বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য জানিয়েছেন, মাজিদের দেখভালের জন্য মন্ত্রিসভার সদস্য গৌতম দেবের উপরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি নিয়মিত গৌতমবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। যে নার্সিংহোমে মাজিদ ভর্তি রয়েছেন সেখানেও যোগাযোগ রাখছেন। তিনি বলেন, “আমি নার্সিংহোমে যাব। তাঁর পরিবারের সঙ্গেও কথা বলব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন