অভিযোগ দায়ের হওয়ার চার দিন পরেও মালদহের গাজল কাণ্ডে অভিযুক্তরা অধরা। ওই নির্যাতিতা মহিলাকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্যেও কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। ওই মহিলার পরিবার পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ওই মহিলা বলেন, ‘‘পুলিশ এখনও অভিযুক্তদের ধরছে না। তাদের কেন ধরছে না তা বুঝতে পারছি না। আমাদের পাশে কেউ না থাকার জন্য ধীর গতিতে তদন্ত করছে পুলিশ। শুনেছি, অসহায়দের সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন সংগঠন পাশে দাঁড়ায়। তবে আমার পাশে কাউকে পাচ্ছি না। তাঁরা সাহায্য করলে হয়ত পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখত।’’
ওই মহিলার পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন এপিডিআর ও গণতান্ত্রিক মহিলা সংগঠনের নেতৃত্ব। গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সম্পাদক রত্না ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ধর্ষণের মতো বিষয় পুলিশ প্রথমে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। এখানেও তাই হয়েছে। আমরা খুব দ্রুত ওই মহিলার গ্রামে গিয়ে তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলব। আমাদের তরফ থেকে যা করা সম্ভব করা হবে। পুলিশ অভিযুক্তদের কেন গ্রেফতার করছে না সেই বিষয়েও আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।’’ মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গ্রামে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’
গাজলের ওই মহিলাকে বাড়িতে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। এক্ষেত্রেও থানা প্রথমে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। পরে অভিযোগ নিয়ে মামলা শুরু করলেও এখনও অধরা অভিযুক্তরা। পুলিশের বিরুদ্ধে সালিশিতে উৎসাহিত করারও অভিযোগ ওঠে। পুলিশ গ্রামে সালিশি করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেয় বলেও অভিযোগ। চাপে পড়ে অভিযোগ নিয়ে গণধর্ষণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ইংরেজবাজারের নরহাট্টাতেও ঠিক একই অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। সাত মাস আগে এখানে এক বিধবা মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টা হয়।
মহিলা থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে সালিশি করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেয়। এর পরেই অভিযুক্ত রিন্টু শেখ ওই মহিলার বাবার চোখে লোহার রড দিয়ে আঘাত করায় সাত মাস ধরে তিনি অসুস্থ অবস্থায় বিছানায়। এখনও তিনি কাজ করতে পারেন না। ফলে ওই নির্যাতিতা বিধবা মহিলাই দিনমজুরি করে সংসার চালাচ্ছেন।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত ধরা পড়লেও এখন সে জামিনে মুক্ত রয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ এখনও চার্জশিট তৈরি করে আদালতে জমা দেয়নি। যার জন্য জামিনে বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযুক্ত রিন্টু। পুলিশের ভুমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এপিডিআরের জেলা সম্পাদক জিষ্ণু রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য জুড়েই এমন ঘটনা বাড়ছে। পুলিশ গাজলের ঘটনার ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় ভুমিকা পালন করছে। আমরা ওই নির্যাতিতা মহিলার ও তাঁর পরিবারের পাশে রয়েছি। শীঘ্রই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।’’