মিলেমিশে লেখাপড়া

পিছিয়ে থাকা পরিকাঠামো নিয়েই চলে হবিবপুরের অনাইল জুনিয়র হাই স্কুল। কিন্তু পড়ুয়ারা আসে নিয়মিতই। এ ধরনের স্কুলগুলোর পড়ুয়াদের সঙ্গে যাতে একটু এগিয়ে থাকা স্কুলের পড়ুয়াদের পঠনপাঠন, সংস্কৃতি, খেলা—এ রকম নানা বিষয়ে মত বিনিময় ঘটে, তার প্রক্রিয়া শুরু করল মালদহ জেলা প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০২:৪০
Share:

সূচনা: আইহো স্কুলে প্রকল্প শুরু হল।—নিজস্ব চিত্র

পিছিয়ে থাকা পরিকাঠামো নিয়েই চলে হবিবপুরের অনাইল জুনিয়র হাই স্কুল। কিন্তু পড়ুয়ারা আসে নিয়মিতই। এ ধরনের স্কুলগুলোর পড়ুয়াদের সঙ্গে যাতে একটু এগিয়ে থাকা স্কুলের পড়ুয়াদের পঠনপাঠন, সংস্কৃতি, খেলা—এ রকম নানা বিষয়ে মত বিনিময় ঘটে, তার প্রক্রিয়া শুরু করল মালদহ জেলা প্রশাসন। সাত দিনের এই প্যাকেজের নাম দেওয়া হয়েছে দ্য টুইনিং অব স্কুল।

Advertisement

গত সোমবার অনাইল জুনিয়র হাই স্কুলের ৩০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে আসা হল ব্লকেরই নাম করা আইহো গার্লস হাই স্কুলের পড়ুয়াদের ছাত্রী আবাসে। ভাবের এই আদান-প্রদান চলবে আগামী সোমবার পর্যন্ত। শুধু লেখাপড়ার গণ্ডির মধ্যেই পড়ুয়াদের বেঁধে রাখা হবে না। এক দিন তাঁদের শিক্ষামূলক ভ্রমণেও নিয়ে যাওয়া হবে।

কিন্তু অনাইল জুনিয়রকে পিছিয়ে পড়া বলা হচ্ছে কেন? স্কুল সূত্রেই জানা গিয়েছে, হবিবপুর ব্লকের একেবারে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় রয়েছে স্কুলটি। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৭৫ জন। পড়ুয়াদের ৮০ শতাংশই আদিবাসী ও বাকি ২০ শতাংশ তফসিলি জাতিভুক্ত। পাঁচটি ক্লাসরুম রয়েছে ও একটি প্রধান শিক্ষকের ঘর। জলের সমস্যা নেই এখন। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হলেও স্কুলের জন্মলগ্ন থেকে (২০০৯ সাল) শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা মাত্র তিন। প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল কুণ্ডু বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় দু’টি শ্রেণির ক্লাস এক ঘরে এক সঙ্গে নিতে হয়। অর্থাৎ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস নেন এক জনই শিক্ষক। ফলে পঠনপাঠন ব্যাহত হয়ই।’’

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, এই কারণেই দুই স্কুলের ৩০ জন করে বাছাই করা মোট ৬০ জন সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা সাত দিন আইহো গার্লস স্কুলের কস্তুরবা গাঁধী ছাত্রী আবাসে এক সঙ্গে তাদের রাখা হচ্ছে। এক দিন শুধু গৌড়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণ থাকছে। বাকি দিনগুলো তারা একই সঙ্গে ক্লাস করবে। একটি মডেল ক্লাসরুমও তৈরি করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, প্রশাসনের আধিকারিকেরাও ক্লাস নেওয়ার পাশাপাশি বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ, বয়ঃসন্ধিকালীন পরামর্শ, চাইল্ড ক্যাবিনেট, বিধিসম্মত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, কন্যাশ্রী সহ পড়ুয়াদের কার্যকরী নানা সরকারি প্রকল্প নিয়েও সচেতন করা হবে। আইহো গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শিপ্রা বসাক ভৌমিক বলেন, ‘‘আমাদের পড়ুয়া ও শিক্ষিকাদের সান্নিধ্যে এসে অনাইল স্কুলের পড়ুয়ারা যদি আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠতে পারে তবেই এই কর্মসূচির সফলতা আসবে।’’

সোমবার অনুষ্ঠানে হাজির অতিরিক্ত জেলাশাসক (সর্বশিক্ষা মিশন) দেবতোষ মণ্ডল বলেন, ‘‘এ ভাবে দুই স্কুলের পড়ুয়াদের মধ্যে মত বিনিময়ের মাধ্যমে শিক্ষার উৎকর্ষতা বাড়ানোই আমাদের লক্ষ্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন