দামি ধান আরও মহার্ঘ্যের আশঙ্কা

জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা শ্রীকান্ত সিংহের দাবি, জেলার কয়েকটি ব্লকের একাংশের মাটি ও আবহওয়া তুলাইপাঞ্জি ধান চাষের ক্ষেত্রে অনুকূল।

Advertisement

গৌর আচার্য

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০২:০০
Share:

চাহিদার তুলনায় জোগান কম। তাই উত্তর দিনাজপুর জেলায় উত্পাদিত সুগন্ধী ও সরু তুলাইপাঞ্জি চালের কদর বরাবরই বেশি। তাই সবসময়ই বাজারে তুলাইপাঞ্জির দাম বেশি। তার উপরে এ বছর বন্যার ফলে তুলাইপাঞ্জির চাষে ক্ষতি হওয়ায় এই চালের দাম আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে জেলা কৃষি দফতর। কৃষি দফতরের সহযোগিতায় ইতিমধ্যেই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত তুলাইপাঞ্জি ধানচাষিরা জলদি জাতের কলাই, সর্ষে ও শীতকালীন নানা আনাজ চাষে নেমে পড়েছেন।

Advertisement

জেলার সহ কৃষি অধিকর্তা শ্রীকান্ত সিংহের দাবি, জেলার কয়েকটি ব্লকের একাংশের মাটি ও আবহওয়া তুলাইপাঞ্জি ধান চাষের ক্ষেত্রে অনুকূল। জেলায় তুলাইপাঞ্জি চালের যা চাহিদা, তা থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ কম তুলাইপাঞ্জি ধানের চাষ হয়। তাই সারা বছরই জেলার বিভিন্ন বাজারে খুচরো বাজারে গড়ে ৭০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে তুলাইপাঞ্জি চাল বিক্রি হয়।

কৃষি দফতর সূত্রের খবর, প্রতি বছর জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে তুলাইপাঞ্জি ধানের বীজ রোপণ করা হয়। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সেই ধান ওঠে। প্রতি বছর জেলার রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, ইটাহার, হেমতাবাদ ও করণদিঘি ব্লকের প্রায় ৪২ হাজার বিঘা জমিতে প্রায় ১ লক্ষ ৫ হাজার কুইন্টাল তুলাইপাঞ্জি ধান উত্পাদন হয়। কৃষি দফতরের দাবি, এ বছর অগস্টে বন্যার জেরে ৪০ শতাংশেরও বেশি তুলাইপাঞ্জি ধানের বীজতলা ভেসে গিয়েছে। জেলার প্রায় ২৫ হাজার চাষি তুলাইপাঞ্জি ধান চাষ করেন। তার মধ্যে এ বছর বন্যার প্রায় ১৫ হাজার চাষির ওই চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

Advertisement

শ্রীকান্তবাবুর দাবি, সামনের জানুয়ারি থেকে প্রায় একবছর জেলার বাজারে তুলাইপাঞ্জি চালের দাম আরও বাড়বে বলে কৃষি দফতর আশঙ্কা করছে। চাষিরা জানিয়েছেন, প্রতি বিঘা জমিতে তুলাইপাঞ্জি ধান চাষ করতে খরচ হয় দু’হাজার টাকা! বিঘা প্রতি প্রায় আড়াই কুইন্টাল তুলাইপাঞ্জি ধানের ফলন হয়। সেই ধান বিক্রি করে চাষিদের বিঘা প্রতি লাভ হয় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। এরপর মহাজন, ফড়ে, চালকল মালিকের হাত ঘুরে খুচরো বাজারে চাল ব্যবসায়ীরা এতদিন সেই তুলাইপাঞ্জি চাল কেজি প্রতি ৭০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।

ইটাহার ও কালিয়াগঞ্জ ব্লকের সুরুণ ও রাধিকাপুর এলাকার দুই তুলাইপাঞ্জি ধান চাষি মহম্মদ সলেমন ও টিকলু বর্মন জানিয়েছেন, এ বছর বন্যার জেরে তাঁদের ১০ বিঘা জমির তুলাইপাঞ্জি ধান চাষ নষ্ট হয়েছে। ক্ষতি সামাল দিতে তাঁরা কৃষি দফতরের সহযোগিতায় জলদি জাতের কলাই চাষ শুরু করেছেন। কৃষি দফতরের আশঙ্কা, আগামী মরসুমে তুলাইপাঞ্জি চালের দাম কেজি প্রতি কমপক্ষে ৪০ টাকা বাড়বে।

তবে সেক্ষেত্রেও বিক্রিতে কোনও প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে। তুলাইপাঞ্জির মান কেমন হবে, সেটাই প্রধান প্রশ্ন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement