(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অমিত শাহ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
বিজেপি সরকার কখনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির কাজে হস্তক্ষেপ করে না। মঙ্গলবার সল্টলেকের বিজেপি দফতরে সাংবাদিক বৈঠকে এই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দুর্নীতি এবং বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না, সে প্রশ্ন তোলা হলে ওই দাবি করেন তিনি।
মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্নোত্তর পর্বে উঠে আসে, বিজেপির নিচুতলায় অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন অভিষেক কেন গ্রেফতার হচ্ছে না। যে বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন (পিএমএলএ)-তে অরবিন্দ কেজরীওয়াল, হেমন্ত সোরেন গ্রেফতার হয়েছিলেন। ইডি সেই আইনে অভিষেকের সংস্থার বিরুদ্ধে হাই কোর্টে রিপোর্ট দিয়েছে এবং অর্থ বাজেয়াপ্ত করেছে। গ্রেফতারি না হওয়ার নেপথ্যে কোনও ‘সেটিং’ (গোপন বোঝাপড়া) আছে কি না, সে বিষয়ে শাহের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “বিজেপির নিচুতলার কর্মীদের বিষয়টি আমার উপর ছেড়ে দিন। বিজেপি কোনও তদন্তকারী সংস্থার কাজে হস্তক্ষেপ করে না। এজেন্সির যা করা উচিত, তা তারা করবে। কাউকে ভয়ও পাবে না, কাউকে বাঁচাবেও না।”
ওই সাংবাদিক বৈঠকে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের নেতা, জনপ্রতিনিধি, মন্ত্রীদের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে অমিত শাহ দাবি করেন, দুর্নীতিতে গোটা বাংলার জনতা ত্রস্ত। তিনি বলেন, ‘‘রোজভ্যালি চিটফান্ড, ক্যাশ ফর কোয়্যারি (তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ), এসএসসি, পুরনিয়োগ, গরুপাচার, রেশন, ১০০ দিনের কাজ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দুর্নীতি— এত দুর্নীতি রয়েছে পুরো তালিকা বলতে গেলে আমার পুরো সাংবাদিক বৈঠকই তাতে কেটে যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি উত্তর দিতে পারবেন? আপনার মন্ত্রীর ঠিকানা থেকে ২৭ কোটি টাকা পাওয়া যায়। যা গুনতে গুনতে নোট গোনার মেশিনও গরম হয়ে যায়।’’
শাহ এর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইঙ্গিত করে নাম না-নিয়ে বলেন, ‘‘বাংলার মতো গরিব রাজ্য থেকে ২৭ কোটি, ২০ কোটি, ১৫ কোটি করে টাকা পাওয়া যাচ্ছে। আপনার কোনও দায় নেই? পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অনুব্রত মণ্ডল, জীবনকৃষ্ণ সাহা, মানিক ভট্টাচার্য, চন্দ্রনাথ সিংহ, পরেশ পাল (যদিও চন্দ্রনাথ, পরেশ পাল কোনও মামলায় জেলে যাননি। পরেশ পালের বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনও মামলাও নেই), কুন্তল ঘোষেরা জেলে যান। ফিরহাদ হাকিম, শোভন চট্টোপাধ্যায়দের অভিযুক্ত বলা হয়। কুণাল ঘোষ তিন বছর জেলে কাটিয়ে আসেন। আর আপনি বলছেন দুর্নীতি হচ্ছে না! আপনি চোখ বন্ধ করে আছেন। কিন্তু বাংলার জনতা চোখ বন্ধ করে বসে নেই। পশ্চিমবঙ্গে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে যে, ভাইপো একাই সব কামাবে। আর কেউ কিছু করতে পারবে না।’’ এ ক্ষেত্রে ‘ভাইপো’ বলে নাম না-করে তিনি অভিষেকের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন বলে অনেকের ধারণা।