১৮ ঘণ্টা পরে ভর্তি

বেলা ১২ টা নাগাদ হাসপাতালে আসা রোগীদের কয়েকজন আত্মীয় কৌতুহলী হয়ে এগিয়ে যান। অসুস্থ ওই বৃদ্ধাকে দেখে হইচই শুরু করেন তাঁরা। এরপরই টনক নড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের৷ তড়িঘড়ি ওই বৃদ্ধাকে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করে নেওয়া হয়৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৭ ১৩:০০
Share:

অবশেষে: হাসপাতালে শুরু হল বৃদ্ধার চিকিৎসা। —নিজস্ব চিত্র।

হাসপাতাল চত্বরে পড়ে ছিলেন তিনি। যেখানে চিকিৎসকদের গাড়ি পার্ক করা হয়, ঠিক সেখানে। অথচ নজরে পড়েনি কারও। গোটা রাত এবং তারপরেও প্রায় একটা বেলা কেটে যাওয়ার পর যখন হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনদের নজর পড়ে তাঁর উপর, ততক্ষণে কেটে গিয়েছে প্রায় ১৮ ঘণ্টা। এরপরেই তড়িঘড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। মুখরক্ষা হয় অমানবিক জলপাইগুড়ির।

Advertisement

ওই বৃদ্ধা এখনও কার্যত অচেতন বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷ ষাটোর্ধ ওই বৃদ্ধাকে বুধবার সন্ধে থেকে চিকিৎসকদের গাড়ি পার্কিং করার জায়গায় পড়ে থাকতে দেখেন হাসপাতালে আসা মানুষজন। তাঁরাই জানিয়েছেন, কেউ শুয়ে আছেন ভেবে তেমন গুরুত্ব দেননি তাঁরা। এভাবেই রাত কাটে। তারপর বৃহস্পতিবার বেলাও গড়ায়। ততক্ষণে বেশ কয়েকজন চিকিৎসকের গাড়ি আসা যাওয়া করেছে ওই পথে। কিন্তু দেখেও দেখেননি কেউ।

বেলা ১২ টা নাগাদ হাসপাতালে আসা রোগীদের কয়েকজন আত্মীয় কৌতুহলী হয়ে এগিয়ে যান। অসুস্থ ওই বৃদ্ধাকে দেখে হইচই শুরু করেন তাঁরা। এরপরই টনক নড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের৷ তড়িঘড়ি ওই বৃদ্ধাকে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করে নেওয়া হয়৷ অনুমান করা হচ্ছে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতেই অসুস্থ ওই বৃদ্ধা হাসপাতালে এসেছিলেন। কিন্তু ততদুর আর পৌঁছোনো হয়নি তাঁর। তার আগেই জ্ঞান হারান তিনি।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্যত অচৈতন্য ওই বৃদ্ধাকে বারবার জিজ্ঞাসা করে তাঁর নাম যে সরস্বতী ঘোষ এখনও পর্যন্ত শুধু সেটুকুই জানতে পেরেছেন তারা ৷ তাঁর বাড়ি কোথায় কিংবা বাড়িতে কে কে রয়েছেন তা এখনও স্পষ্ট নয় চিকিৎসকদের কাছে৷ সুপার বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধার ব্লাড সুগার প্রচন্ড কমে গিয়েছে৷ কার্যত অচৈতন্যভাবে রয়েছেন তিনি৷ তার নাম যে সরস্বতী ঘোষ সেটুকুই কোনওমতে আমরা জানতে পেরেছি৷’’

বিস্মিত জলপাইগুড়ির বিশিষ্ট জনেরা৷ জলপাইগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিভিন্ন হাসপাতালে সরকারি পরিষেবা নিয়ে এত প্রচার হয়৷ কিন্তু সেই পরিষেবা আদৌ কতটা রয়েছে তা এই ঘটনাই প্রমাণ করে৷’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও যুক্তি, নজরে পড়লে অনেক আগেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে নেওয়া হত৷ সুপার বলেন, ‘‘কিছুদিন আগেও আমরা নর্দমার ধারে পড়ে থাকা এক মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম৷’’ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বৃদ্ধাকে দ্রুত সুস্থ করে তোলার চেষ্টা চলছে ৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন