সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালের বেডে সঙ্গীতা। নিজস্ব চিত্র।
বিরলতম রোগে আক্রান্ত ছিলেন সঙ্গীতা কর্মকার। পর পর পাঁচ বার গর্ভপাত হওয়ার পরে ষষ্ঠ বার একটি সুস্থ কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন তিনি। বর্তমানে মা ও সদ্যোজাত কন্যা দুজনেই সুস্থ আছেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, তুফানগঞ্জ পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কর্মকার পাড়ার বাসিন্দা সঙ্গীতা গর্ভপাতজনিত জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ডাক্তারি পরিভাষায় যার নাম ‘রেকারেন্ট প্রেগন্যান্সি লস’। বিয়ের পরে পাঁচ বার তিনি গর্ভবতী হন। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কিছু মাস পরেই গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়। কলকাতা, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু,গুয়াহাটি-সহ বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করান সঙ্গীতা। কিন্তু প্রচুর অর্থ ব্যয় করেও কোনও সুরাহা পাননি। অবশেষে কোচবিহারের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ রাধাকান্ত পালের চিকিৎসায় সাড়া দিয়ে আজ একটি ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দিলেন তিনি।
চিকিৎসক পাল বলেন , ‘‘এ ধরনের গর্ভপাতের ঘটনা খুবই বিরল। পাঁচ বার গর্ভপাত হবার পর সঙ্গীতা আমার কাছে এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। দীর্ঘ ন’মাস চিকিৎসা করানোর পর আজ ওঁকে শিশুসন্তান দিতে পেরে আমরা সকলে খুশি। বর্তমানে মা এবং সন্তান দুজনই সুস্থ আছেন। তবে এ ধরনের ঘটনা আমার চিকিৎসক জীবনে এই প্রথম।’’
হাসপাতালের বেডে শুয়ে সঙ্গীতা বলেন, ‘‘আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম মা হওয়ার। বহুবার, বহু জায়গায় চিকিৎসা করিয়ে কোনও কাজ হয়নি। এ বার মা হতে পেরে সত্যি খুব খুশি আমি।’’ সঙ্গীতা স্বামী, পেশায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী সুমন কর্মকার বলেন, ‘‘ভাবিনি কোনদিন বাবা ডাক শুনতে পাব। ১০ বছরের বিবাহিত জীবনে পাঁচ বার গর্ভপাত হওয়ার পরে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ডাক্তারবাবুর চেষ্টায় আজ ঘরে লক্ষ্মী এসেছে। পরিবারের আমরা সকলে খুব খুশি।’’