জমির বেআইনি কারবারে ধৃত তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ চৌহান ওরফে হিম্মত সিংহকে নতুন দু’টি জমির মামলায় গ্রেফতার করার জন্য আদালতে অনুমতি চাইল পুলিশ। সোমবার শিলিগুড়ি কমিশনারেটের মাটিগাড়া এবং প্রধাননগর থানার পুলিশ এসিজেএম সুজিত কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় কাছে ওই আবেদন জানিয়েছে। আগামী সোমবার, ১২ নভেম্বর কালীপুজো, ভাইফোঁটার ছুটির পরে আদালত খুললে দু’টি মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। এ দিন মাটিগাড়া থানার পুরনো মামলায় জামিন নাকচ হয়ে হিম্মতকে ১৭ নভেম্বর অবধি জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আদালত সূত্রের খবর, গত শনিবার মাটিগাড়া থানার পিনটেল ভিলেজ লাগোয়া একটি জমির মামলায় হিম্মতকে পুলিশ হেফাজত থেকে আদালতে হাজির করানো হয়। কিন্তু মামলার কেস ডায়েরি না থাকায় পুলিশকে সোমবার তা পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়। এ দিন হিম্মতকে আদালতে আনা হয়নি। কেস ডায়েরি দেখার পরে বিচারক ওই মামলায় হিম্মতকে ১৭ নভেম্বর অবধি জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। তারপরেই দুই থানার পুলিশ নতুন দু’টি মামলায় হিম্মতকে গ্রেফতারের আবেদন করে। কিন্তু অভিযুক্ত এজলাসে না থাকায় বিচারক আদালত ছুটির পরে সোমবার ওই আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
সরকারি আইনজীবী সুদীপ রায় বসুনিয়া বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি পুলিশ তদন্তে নেমে একের পর এক জমি বেআইনি কারবারে হিম্মতের জড়িত থাকার তথ্য পাচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, মাটিগাড়া থানার পাথরঘাটা এবং প্রধাননগর থানার চম্পাসারি এলাকা মিলিয়ে প্রায় ৬ বিঘা দু’টি জমি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। ২০১৭ সালে দুই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জমি কারবারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমে সব থানায় জমির মামলাগুলো খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। সেখানেই ওই দুটি মামলায় হিম্মতের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের দাবি, জমির ভুয়ো নথিপত্র তৈরি করে হিম্মত ওই সমস্ত জমি লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছে। পরে জমির আসল মালিকেরা তা টের পেতেই পুলিশকে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।
এর আগে চম্পাসারি মোড়ে পূর্ত দফতরের জমি দখল করে বাজার বসানো, আদিবাসী দম্পতি জমি দখল, ভুয়ো জমি টাকা আদায়ের চেষ্টা ছাড়াও একটি জমি দখল করে এক আশ্রম কর্তৃপক্ষকে বিক্রির অভিযোগে হিম্মতের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। এর প্রত্যেকটিতে অবশ্য হিম্মত জামিন পেয়েছেন। সম্প্রতি মাটিগাড়া থানার পিনটেল ভিলেজ এলাকায় একটি জমি দখলের অভিযোগে হিম্মত এখন হেফাজতে রয়েছে। অভিযুক্তের আইনজীবী চন্দন দে বলেন, ‘‘শুধুমাত্র আটকে রাখার উদ্দেশ্যে পুলিশ এসব মামলার গল্প সাজাচ্ছে।’’