আশিঘর ফাঁড়ি ঘেরাও করল তৃণমূল

ভোটের পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। সিপিএমের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলে ভক্তিনগর থানার আশিঘর ফাঁড়ি ঘেরাও করল তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:০৬
Share:

ভোটের পরে ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। সিপিএমের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলে ভক্তিনগর থানার আশিঘর ফাঁড়ি ঘেরাও করল তৃণমূল। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়াল যে তা সামাল দিতে এক সময় ফাঁড়িতে ছুটে যেতে হল আইসি অনুপম মজুমদারকে। পরে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে প্রায় দু’ঘণ্টা পরে ঘেরাও বিক্ষোভ উঠে যায়।

Advertisement

অভিযুক্ত সিপিএম কর্মীদের তরফে গোটা ঘটনাটাই অস্বীকার করা হয়েছে। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে কোনও গোলমালই হয়নি। বরং কয়েক জন মহিলা মারামারি করছিলেন। সেই মহিলাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দেন ওঁরা। তাঁরা সিপিএম কর্মী বলেই তৃণমূল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলেও তাঁরা দাবি করেন।

এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, ভোটের সময়েও কী ভাবে শাসক দল তাদের প্রভাব খাটিয়ে বিরোধীদের গ্রেফতারের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে পুলিশের উপরে? শিলিগুড়ি পুলিশের এডিসি পূর্ব মৃণাল মজুমদার অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘অভিযোগ হয়েছে। তা খতিয়ে দেখে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

শিলিগুড়ির মেয়র তথা শিলিগুড়ি বিধানসভার কেন্দ্রের জোট সমর্থিত সিপিএম প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য দাবি করেন, তৃণমূলের প্রবণতাই হচ্ছে বিরোধীদের বিভিন্ন রকম মামলায় জড়িয়ে হেনস্থা করা। শ্লীলতাহানি তাঁদের একটা হাতিয়ার। এর আগেও ভোটের সময় তাঁদের শিক্ষক সংগঠনের সদস্যদের মারধর করে পাল্টা তাঁদের বিরুদ্ধেই শ্লীলতাহানির মামলা দিয়েছে। এমনকী, তৃণমূলের বিক্ষোভকেও ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল এখনও সরকারে রয়েছে। তার পরেও পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোয় পরিষ্কার, তারা বিরোধী দলে থাকার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।’’

কড়া প্রতিক্রিয়া জোট সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী তথা কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকারেরও। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল ডুবন্ত জাহাজ। ভাড়া করা সৈনিক দিয়ে যুদ্ধ জেতার চেষ্টা করছিল তারা, কিন্তু তাতে হেরে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাতেই ঘাবড়ে গিয়ে মিথ্যা অভিযোগ, থানা ঘেরাওয়ের মতো এই ধরনের হঠকারী কাজ করছে।’’ যদিও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব ঘটনার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোটের সময় মাঝাবাড়ির জার্মেলস অ্যাকাডেমির একটি বুথে ভোটারদের প্রভাবিত করা হচ্ছে বলে সিপিএমের দিকে অভিযোগ তুলে তাঁদের কয়েক জন মহিলা কর্মীকে মারধর করেন তৃণমূলের কয়েক জন মহিলা। এর পরে ঘটনাটি সেখানে মিটে যায় বলে দু’পক্ষের দাবি। অভিযোগ, এ দিন সকালে পঞ্চায়েত সদস্য সোমা বর্মন ও তাঁর মেয়ে রিয়াকে মারধর করে, গলার হার ছিনতাই করে পালায় কয়েক জন দুষ্কৃতী। তৃণমূলের পক্ষে দেবাশিস প্রামাণিকের অভিযোগ, ‘‘আমাদের পঞ্চায়েত সদস্য-সহ আরও কয়েক জনকে মারধর করে ছিনতাই ও শ্লীলতাহানি করে সিপিএমের লোকেরা। আমরা তাঁদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’ যদিও অভিযুক্তদের অন্যতম বিজয় রায় বলেন, ‘‘আমাদেরই এক মহিলা সদস্য সন্ধ্যা মণ্ডলকে মারধর করা হচ্ছিল। তাই শুনে আমি সেখান থেকে মহিলাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করাই। এ ছাড়া আমি কিছুই জানি না। আমাদের বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ হল, তা-ও বুঝতে পারছি না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement