সব বই পেয়ে গেল দাড়িভিট

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে গোলমাল চূড়ান্ত চেহারা নিয়েছিল দাড়িভিটে। যার জেরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ দুই যুবকের। এমন কোনও গন্ডগোল যাতে আর না হয়, সে দিকে এখন কড়া নজর রেখেছে প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪৭
Share:

বিতরণ: পড়ুয়াদের বই দেওয়া হচ্ছে দাড়িভিট স্কুলে। ছবি: অভিজিৎ পাল

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে গোলমাল চূড়ান্ত চেহারা নিয়েছিল দাড়িভিটে। যার জেরে পুলিশের গুলিতে প্রাণ দুই যুবকের। এমন কোনও গন্ডগোল যাতে আর না হয়, সে দিকে এখন কড়া নজর রেখেছে প্রশাসন। ফলে যখন প্রায় সর্বত্র বই বিতরণ নিয়ে কিছু না কিছু সমস্যা রয়েছে, তখন দাড়িভিট স্কুল পেয়ে গিয়েছে সব বই। এ কথা জানিয়েছেন দাড়িভিট স্কুলের প্রশাসক তথা ইসলামপুরের মহকুমাশাসক মণীশ মিশ্র-ই। স্কুল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পড়ুয়াদের মধ্যে বই বিতরণও শেষ।

Advertisement

গত বছর ইসলামপুর মহকুমা জুড়েই বই বিতরণ নিয়ে সমস্যা ছিল। কোনও কোনও স্কুলে কিছু ক্লাসে বই দিতেই পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ বছর স্কুলগুলিতে পুজোর আগে থেকেই তাদের ছাত্রের সংখ্যার পাশাপাশি কত বই লাগবে, তা প্রশাসনকে জানিয়ে দিয়েছিল। সেই মতো বই দেওয়া হয়েছে ভর্তির আগে।

ইসলামপুর হাইস্কুল সূত্রে খবর, তাদের প্রায় ২৫০০ ছাত্র। অথচ গত বছরই তাদের বই বিতরণে সমস্যা ছিল। অনেক ক্লাসেই সব বই দিতে পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিছু ক্ষেত্রে বইয়ের প্রতিলিপি করে পড়তে হয়েছিল ছাত্রদের। এ বছরও বিভিন্ন ক্লাসে উর্দু ও হিন্দি বই অনেক কম এসেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সলিমু্দ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘গত বছর যেমন বই নিয়ে একটা সমস্যা ছিল. এই বছর সমস্যাটা তুলনামূলক কম। তবে কিছু বিষয়ে বই কম এসেছে।’’ আবার ডালখোলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার বিশ্বাসও জানান, তাঁরাও উর্দু, হিন্দির বই সব পাননি। ইসলামপুরের মিলনপল্লি স্কুলের সপ্তম শ্রেণির একটি বই পাওয়া যায়নি বলে স্কুলের কয়েক জন অভিভাবকের দাবি। তবে তা স্বীকার করেননি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের তপন ভৌমিক। চোপড়া বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মল্লিকা সাহা বলেন, ‘‘গত বছর সমস্যা ছিল অনেক বেশি। এ বছর সমস্যা কিছুটা মিটেছে। তবে সবটা এখনও ঠিক হয়নি।’’ ইসলামপুরের স্কুল পরিদর্শক শুভঙ্কর নন্দী অবশ্য বলেন, ‘‘এ বছর সব স্কুলই সব বই পেয়েছে। কোন বই নিয়েই কোন সমস্যা নেই।’’

Advertisement

দাড়িভিট স্কুলে সমস্ত বই দিতে পেরেছে বলেই জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিল মণ্ডল বলেন, ‘‘সমস্ত ছাত্রছাত্রীকেই বই দেওয়া হয়েছে। যারা এর মধ্যে স্কুলে আসেনি, তারাও স্কুলে এলে বই পাবে।’’ ২০ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে গোলমালে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান তাপস বর্মণ ও রাজেশ সরকার আহত হয়েছে ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র বিপ্লব সরকারও। ঘটনার পর থেকে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল স্কুল। পরে তা শর্তসাপেক্ষে খোলা হয়।

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, নিহতের পরিবারের পিছনে বিজেপি রয়েছে। তাই রাজেশ, তাপসের বাবাদের রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, ‘‘স্কুল বই বিতরণে এ বারে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় সমস্যা হয়েছে। কিন্তু দাড়িভিটে প্রশাসন বাড়তি সতর্ক ছিল। তাই এখানে কোনও গোলমালের সুযোগ নেই।’’

তৃণমূল সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, দাড়িভিট নিয়ে এর মধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। যেমন, দাড়িভিট স্কুলে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা, মিড ডে মিলের জায়গায় পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দাড়িভিটে দলেঞ্চা নদীর উপরে সেতুর কাজও শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন