রথের রশিতে টান কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র
কড়া নিরাপত্তায় রথে চেপে মাসির বাড়ি গেলেন ‘বড়বাবা’।
উল্টো রথের দিন গুঞ্জবাড়ি থেকে মূল মন্দিরে ফিরবে কোচবিহারের রাজাদের কুলদেবতা মদনমোহন দেবের বড় বিগ্রহ। ভক্তদের অনেকের কাছেই ওই বিগ্রহ বড়বাবা নামে পরিচিত। এই সময়ে মূল মন্দিরের সিংহাসন সামলাবেন ‘ছোটবাবা’। মদনমোহনের ছোট বিগ্রহটি তখন ভাল করে দেখার সুযোগ পাবেন ভক্তরা। এ দিন বিকেলে রাজ পরিবারের দুয়ারবক্সী অমিয় দেববক্সীর অসুস্থতার জন্য তাঁর ভাই অজয় দেববক্সী প্রথম রথের দড়িতে টান দিয়ে উৎসবের সূচনা করেন। বৃষ্টি উপেক্ষা করেও শহরের রাজপথে রথের দড়ি টানতে ছিল লোকারণ্য।
কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক অরুন্ধতী দে বলেন, “নির্বিঘ্নে রথে সওয়ার বিগ্রহ ডাঙ্গোরাই মন্দিরে পৌঁছেছে।” দুয়ারবক্সী অমিয়বাবু ফোনে বলেন, “কয়েক দিন ছোটবাবাই মূল সিংহাসনে থাকবেন।”
দেবোত্তর ট্রাস্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের বৈরাগী দিঘি পাড়ের ওই মন্দিরে মদনমোহন দেবের দু’টি বিগ্রহ রয়েছে। বড় বিগ্রহটিই সারা বছর মূলত দেখার সুযোগ পান ভক্তরা। মূল সিংহাসনে বেশির ভাগ সময় সেটিই রাখা হয়। ছোটবিগ্রহটি মন্দিরের ভিতরে আলাদা সিংহাসনে বসানো হয়। রথের সময় মূল সিংহাসন ফাঁকা না রেখে ছোটবাবাকে সেখানে রাখা হয়। দেবোত্তর ট্রাস্টের এক কর্মী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “২ জুলাই বড়বাবা মূল মন্দিরে ফিরবেন।’’ গবেষক দেবব্রত চাকি বলেন, “এমনটাই বরাবরের পরম্পরা।”
এ দিন দুপুর থেকে রথ ঘিরে ভক্তদের আনাগোনা শুরু হয়। বিকেল হতেই ভিড় বাড়তে থাকে। কোচবিহারে বাবুরহাটে ইসকনের রথযাত্রা ঘিরেও ব্যাপক ভিড় হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বাবুরহাট সহ একাধিক রথ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে বাবুরহাটে রথযাত্রার অনুষ্ঠানস্থলে যান কোচবিহারের তৃণমূল সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দুই নেতা পুজো দেন। দিলীপবাবু বলেন, “সামাজিক অনুষ্ঠানে আমরা থাকি, এখানে কোনও রাজনীতি নয়।” পার্থবাবুও বলেন, “অন্য সামাজিক অনুষ্ঠানে যেমন যাই, তেমন ওখানেও গিয়েছিলাম। আলাদা ব্যাপার নেই।” এ দিন থেকে কোচবিহার শহরের গুঞ্জবাড়িতে রথের মেলা শুরু হয়েছে।