দুরবস্থা: জ্বর নিয়ে ভর্তি রোগীরা। জোটেনি শয্যা। শিলিগুড়ি হাসপাতালে বারান্দাতেই কাটছে দিন। সোমবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য সরকারি আধিকারিকদের ফোন করে কাজের ‘এক্তিয়ার’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলে অভিযোগ শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এসজেডিএ) চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর। পাল্টা অভিযোগে মেয়র অশোকবাবু জানালেন সংবিধান ভেঙে সৌরভবাবুর সংস্থা পুর এলাকায় কাজ করতে আধিকারিকদের লিখিত নির্দেশ দিয়েছে। নেতাদের এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের উপলক্ষ শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গি প্রতিরোধ।
ডেঙ্গি নিয়ে শিলিগুড়িতে রাজনৈতিক চাপানউতোর অবশ্য নতুন নয়। শিলিগুড়ি-সহ লাগোয়া এলাকায় ডেঙ্গি রুখতে মশারি বিলি করা হবে বলে এ দিন জানিয়েছেন এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান সৌরভ। পর্যাপ্ত সংখ্যক মশারি সংস্থার হাতে রয়েছে, শিলিগুড়ি শহরে মশারি বিলিতে কোনও খামতি হবে না বলে দাবি করা হয়েছে। ডেঙ্গি রুখতে সচেতনতা প্রচারের জন্য আরও ২০ লক্ষ টাকার বরাদ্দ পেয়েছে এসজেডিএ। এর আগে তারা ৪০ লক্ষ টাকা পেয়েছিল। মোট ৬০ লক্ষ টাকায় শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি-সহ ডুয়ার্সেও সচেতনতা ও ডেঙ্গি প্রতিরোধ করা হবে। অশোকবাবুর দাবি, ‘‘সারা রাজ্যে পুরসভা ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে বরাদ্দ পেলেও শিলিগুড়ির ক্ষেত্রে অর্থ পেয়েছে এসজেডিএ।’’ প্রথমবার এসজেডিএ বরাদ্দ পাওয়ার পরেই পুরসভার সঙ্গে চাপাউতোর শুরু হয়েছিল পুরসভার।
সোমবার এসজেডিএর চেয়ারম্যান সৌরভবাবু অভিযোগ করেছেন, সংস্থার আধিকারিকদের ফোন করছেন অশোকবাবু। কোন এক্তিয়ারে সংস্থা শিলিগুড়ির পুর এলাকায় ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ করছে তা নিয়ে মেয়র কৈফিয়ত চাইছেন বলে সৌরভের অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘শহরে ডেঙ্গিতে মৃত্যু হচ্ছে। পুরসভা কোনও কাজ করছে না। আমরা কাজ করলে মেয়র আধিকারিকদের ফোন করে নানা কথা বলছেন।’’ সৌরভবাবুর মন্তব্য, ‘‘মেয়র এভাবে নিজের পদের অবমাননা করছেন।’’ ফোন করার কথা স্বীকার করে মেয়র, এসজেডিএ-এর সাম্প্রতিক একটি নির্দেশিকার দিকে আঙ্গুল তুলেছেন।
১ নভেম্বর সংস্থার সিইও ডেঙ্গি রুখতে তাঁর দফতরের আধিকারিকদের কাজের দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছেন। সেই নির্দেশিকায় শিলিগুড়ি পুর এলাকার জন্য একজন পদস্থ আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অশোকবাবুর প্রশ্ন, ‘‘পুরসভাকে ডিঙিয়ে এ ভাবে পুর এলাকায় কাজ করা যায় না। সাংবিধানিক কাঠামো মানতে হবে।’’ চলতি বছর রাজ্যের কিছু এলাকায় সেনা বাহিনী তল্লাশি শুরু করায় মুখ্যমন্ত্রী প্রতিবাদ করেছিলেন। সে প্রসঙ্গ তুলে অশোকবাবু বলেন, ‘‘পুরসভার যে কাজ করার কথা সেটা এসজেডিএ কেন নিজেদের আধিকারিকদের দিয়ে করাবে। বিদ্যাসাগর সেতুতে সেনা তল্লাশি করতেই যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সাংবিধানিক কাঠামো নিয়ে গেল গেল রব তোলেন সেই রাজ্য সরকারিই গণতন্ত্র এবং সংবিধানকে বারবার লঙ্ঘন করে চলেছে।’’ নির্দেশ নিয়ে অবশ্য কোনও সংশয় নেই বলে দাবি সৌরভবাবুর। তাঁর দাবি, ডেঙ্গি আটকানোই মূল কথা, সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘অশোকবাবু রাজনীতি করতে চান, তাই এমন কথাবার্তা বলছেন।’’