ভবন ঝকঝকে অথচ ডাক্তার নার্স কম

ডাক্তার ও নার্সদের এই অপ্রতুলতার জেরে হাসপাতালগুলিতে পরিষেবাও ঠিকঠাক মিলছে না। কথায় কথায় রোগীদের রেফার করা হচ্ছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

মালদহ শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৩
Share:

করিডরে: শয্যা নেই, রোগীর স্থান মেঝেতে। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালের শয্যা ৩০টি। কিন্তু বরাবরই ৭০ থেকে ৮০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। শয্যার অভাবে বেশিরভাগ রোগীদের মেঝেতেই ঠাঁই নিতে হয়। এ হেন হাসপাতালে ডাক্তার থাকার কথা দশ জনের, অথচ রয়েছেন মাত্র পাঁচ জন। আর নার্স ১৫ জনের জায়গায় আট জন। জিডিএ তো আরও কম, দশ জনের জায়গায় চার জন। হাসপাতালের পরিকাঠামো ঠিকঠাক থাকলেও এই কম সংখ্যক ডাক্তার-নার্স নিয়েই চলছে পরিষেবা।

Advertisement

এই চিত্র কালিয়াচক ২ ব্লকের বাঙিটোলা গ্রামীণ হাসপাতালের। শুধু এই বাঙিটোলা হাসপাতালই নয়, এই ডাক্তার-নার্সদের অপ্রতুলতা গোটা মালদহ জেলার গ্রামীণ এলাকাজুড়ে থাকা গ্রামীণ ও প্রাথমিক হাসপাতালগুলিরই। অভিযোগ, ডাক্তার ও নার্সদের এই অপ্রতুলতার জেরে হাসপাতালগুলিতে পরিষেবাও ঠিকঠাক মিলছে না। কথায় কথায় রোগীদের রেফার করা হচ্ছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। গ্রামীণ এলাকার এ হেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে বাড়ছে ক্ষোভ।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বাদ দিয়ে মালদহ জেলার গ্রামীণ এলাকার ১৫টি ব্লকে ১৬টি গ্রামীণ হাসপাতাল রয়েছে। চাঁচলে একটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালও রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ৩৪টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং এগুলির মধ্যে মাত্র ৯টিতে বেড চালু রয়েছে, বাকিগুলিতে শুধু আউটডোর চলে। আর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে ৫১১টি। সুপার স্পেশালিটি থেকে শুরু করে গ্রামীণ ও বেড চালু থাকা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো ঠিকঠাকই রয়েছে।

Advertisement

গত কয়েক বছরে বেশিরভাগ গ্রামীণ হাসপাতালের ভবন ঝা-চকচকে করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, হাসপাতালগুলিতে ডাক্তার ও নার্সের ঘাটতি থাকায় পরিষেবা ঠিকঠাক মিলছে না। দফতর সূত্রেই খবর, অমুমোদন থাকা সত্ত্বেও এ পর্যন্ত জেলায় অন্তত আশি জন ডাক্তার, একশোর বেশি নার্স ও প্রায় তিনশো জন জিডিএ কর্মী কম রয়েছেন।

মাস কয়েক আগে মালদহ জেলার গ্রামীণ এলাকার হাসপাতালগুলির জন্য ৩৮ জন ডাক্তার নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যে মাত্র ৮ জন কাজে যোগ দিয়েছেন। বাকিরা কেউ জেলা স্বাস্থ্য দফতরে যোগাযোগই করেননি। ফলে ঘাটতি থাকা ডাক্তার-নার্স নিয়েই চলছে গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবা। সেই পরিষেবা নিয়ে উঠছে নানা অভিযোগ। ভুক্তভোগী বাসিন্দারা বলেন, গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে কোনও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নেই। কোনও জটিল অসুখে আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে গেলে সেই হাসপাতালগুলিতে এক মুহূর্তের জন্যও চিকিত্সকরা রাখেন না, রেফার করে দেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এ ছাড়া একমাত্র চাঁচল সুপার স্পেশালিটি ও গাজোল গ্রামীণ হাসপাতাল ছাড়া অস্ত্রোপচারের কোনও ব্যবস্থা নেই। মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈয়দ শাহজাহান সিরাজ বলেন, ডাক্তার, নার্সের ঘাটতি রয়েছে। তবে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন