রাজ-চক্রে শিক্ষা ভূত

এক সময় বামেদের দাপট ছিল উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখন দাপট রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের। শুধু ছাত্রছাত্রীরা নয়, শিক্ষকদের একটি অংশ শাসক দলের ঘনিষ্ঠ।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩১
Share:

বিতর্কে: পুন্ডিবাড়িতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। —নিজস্ব চিত্র।

এক সময় বামেদের দাপট ছিল উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখন দাপট রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের। শুধু ছাত্রছাত্রীরা নয়, শিক্ষকদের একটি অংশ শাসক দলের ঘনিষ্ঠ। আর সে জন্যেই উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

বুধবার সারা রাত ধরে কার্যত অভুক্ত অবস্থায় কৃষি অনুষদ বিভাগের ডিন তপন হাতকে তাঁর অফিসের মধ্যেই আটকে রাখেন ছাত্রছাত্রীদের একটি অংশ। পাশের চেয়ারে একটি কুশপুতুল বসিয়ে তাঁর গলায় জুতোর মালা পড়িয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, ওই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতরা শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। আবার, তপনবাবুও শাসক দলের এক নেতার ঘনিষ্ঠ বলেই দাবি।

ছাত্রছাত্রীদের একটি অংশের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিজেও যে কোনও ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হলে শাসকদলের নেতাদের সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় থাকেন। সে কারণেই, এত বড় ঘটনা ঘটে গেলেও তিনি কোনও পদক্ষেপ করেননি। উপরন্তু, অভিযুক্ত ছাত্রছাত্রীদের আড়াল করতেই তিনি তৎপর হয়ে ওঠেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরন্তন চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “ছাত্রছাত্রীরা কিছু দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছেন। তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া হয়েছে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, “সব সময়ই শাসক দলের প্রভাব বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকে। তা কোনও বড় বিষয় নয়।”

Advertisement

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “রাজ্য জুড়ে শিক্ষাক্ষেত্রে অরাজক পরিস্থিতি। একই অবস্থা উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিছু রাজনৈতিক নেতা ও শাসক দলের দাপট বন্ধ না হলে এমনটা চলতেই থাকবে।”

তবে তৃণমূলের কোচবিহার জেলার নেতা তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় ওই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “সুস্থ রাজনৈতিক বাতাবরণ সব জায়গায় থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু রাজনীতির নামে উচ্ছৃঙ্খলতা বরদাস্ত করা যায় না।” তিনি অবশ্য দাবি করেছেন, এমন ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। যুব লিগের রাজ্য সম্পাদক আব্দুর রউফ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অসুস্থ রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন