ঘেরাও, পদত্যাগ, বিশৃঙ্খলা। অচলাবস্থা যেন কাটছেই না গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ বার তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ধন্দ।
একদিকে উপাচার্য ইস্তফা দিয়েও কলকাতা থেকে কাজ করছেন। তার মধ্যেই অস্থায়ী উপাচার্যের নাম জানা গিয়েছে। এই অবস্থায় ধোঁয়াশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্মী ও ছাত্র-ছাত্রীরা। এক আধিকারিকের কথায়, “বুঝতেই পারছি না বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কী চলছে।”
দশদিন আগে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্র। তবে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ইস্তফা দিলেও কলকাতায় বসেই কাজ করছেন তিনি। সম্প্রতি কলকাতাতেই অর্থ কমিটির বৈঠকও করেছেন তিনি। আগামী ২৯ নভেম্বর কলকাতাতেই তিনি এক্সকিউটিভ কাউন্সিল ও কোর্টের বৈঠক ডেকেছেন। এর মধ্যেই বিকাশ ভবন সূত্রে জানা যায়, অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে যোগ দিচ্ছেন স্বাগত সেন। তাতেই ধন্দ আরও বেড়েছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কে পদত্যাগ করেছেন, কে নতুন যোগ দেবেন, কবে যোগ দেবেন কিছুই বুঝতে পারছি না।’’
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের নির্দেশে তিনজনের প্রতিনিধি তদন্ত করে যান। তদন্ত শুরু করে জেলা প্রশাসনও। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলপ্রকাশ-সহ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপালবাবুর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামেন একদল ছাত্রছাত্রী। তাদের আড়াল থেকে মদত দেওয়ার অভিযোগও ওঠে যুব তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। পাল্টা আন্দোলনে নামে তৃণমূল ছাত্র পরিষদও। আন্দোলন পাল্টা আন্দোলনের চাপে গত, ১৫ নভেম্বর কলকাতায় ইস্তফা দেন গোপালবাবু। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের অনেকের দাবি, দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতেই ইস্তফা দেন গোপালবাবু।
দুর্নীতির অভিযোগ, একাধিক আধিকারিকদের ইস্তফা, ঘেরাও আন্দোলনে অস্থির বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য থেকে শুরু করে রেজিস্ট্রার, দুই সহকারী রেজিস্ট্রার ইস্তফা দিয়েছেন। এমন অবস্থায় স্বাগতবাবু কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেন তা নিয়ে চর্চা চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে। বিশ্ববিদ্যালয়েরই একটি সূত্রে খবর, ১ ডিসেম্বর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে পারেন।
গৌড়বঙ্গের ওয়েবকুপার আহ্বায়ক সাধন সরকার অবশ্য বলেন, “স্বাগতবাবুকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমরা তাঁকে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করব। আশা করছি উনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করবেন।”