ঝুলে থাকা মৃত বধূ, ক্ষোভ

তিনদিন ধরে ইংরেজবাজার থানার কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়ো সাগরদিঘি গ্রামে হাই ভোল্টেজ ইলেকট্রিক তার বদলানোর কাজ করছে বিদ্যুৎ দফতর। প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে কাজ। অভিযোগ, কাজ শেষের পরেও ইলেকট্রিকের তার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১০:১০
Share:

অবরোধ: দেহ রেখে প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র

হাই-ভোল্টেজ ইলেকট্রিক তার বদলানোর সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক মহিলার। বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিতে কাজ চলাকালীন ঝুলে থাকা তারেই ওই মহিলা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন বলে অভিযোগ।

Advertisement

শনিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মালদহের ইংরেজবাজার থানার বড়ো সাগরদিঘি গ্রাম। বিদ্যুৎ দফতরের প্রতি গাফিলতির অভিযোগ তুলে রাস্তায় মৃতদেহ ফেলে রেখে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের ক্ষোভ, বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতিতেই এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশকে ঘিরেও চলে টানা বিক্ষোভ। টানা সাত ঘণ্টা পরে প্রশাসন ও পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা। মৃতের নাম কল্পনা মণ্ডল (৩৮)। তাঁর স্বামী মনোরঞ্জনবাবু পেশায় ভ্যানচালক। এ দিনই মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যালে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

তিনদিন ধরে ইংরেজবাজার থানার কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়ো সাগরদিঘি গ্রামে হাই ভোল্টেজ ইলেকট্রিক তার বদলানোর কাজ করছে বিদ্যুৎ দফতর। প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে চলছে কাজ। অভিযোগ, কাজ শেষের পরেও ইলেকট্রিকের তার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে ছিল। এ দিন সকাল ছ’টা নাগাদ গ্রামের আম বাগানে ছাগল চরাতে নিয়ে গিয়েছিলেন কল্পনা দেবী। সেখানেই তাঁর গায়ে সেই তার লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর শরীরের একাংশ পুড়ে যায়। ঘটনায় বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে রেখে মালদহ-মোথাবাড়ি রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রামবাসীরা। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে চলে অবরোধ।

Advertisement

ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তাদের ধাওয়া করে এলাকাছাড়া করে দেন বিক্ষোভকারীরা। পরে ইংরেজবাজার থানার আইসি পূর্ণেন্দু কুণ্ডুর নেতৃত্বে বড় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। ঘটনাস্থলে যান জয়েন্ট বিডিও উত্তম বিশ্বাস। দুপুর ১টা নাগাদ বিক্ষোভ ওঠে। আন্দোলনকারীরা দাবি জানান, মৃতের পরিবারকে অবিলম্বে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ দফতরের কর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। মৃতার স্বামী মনোরঞ্জন বাবু বলেন, “আমি অসু্স্থতার কারণে ঠিক মতো কাজ করতে পারিনা। আমার স্ত্রী বিড়ি বেঁধে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোনও রকমে সংসার চালাচ্ছিল। বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতির জন্য আজ এমন ক্ষতি হয়ে গেল।”

গ্রামপঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপ মন্ডল বলেন, “গ্রামের একটি খেলার মাঠের উপরেও ইলেকট্রিক খুঁটি বসানো হয়েছে। সেই খুঁটিতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে তার ঝুলে রয়েছে। অথচ প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি। তাই গ্রামবাসীরা এ দিন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন।” জয়েন্ট বিডিও উত্তমবাবু বলেন, “গ্রামবাসীদের দাবি দাওয়া খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন