চিকিৎসাধীন: জখম যুবক। —নিজস্ব চিত্র।
জ্ঞান ফিরেছে ট্রেন থেকে পড়ে অচৈতন্য যুবক বানু সাতনামির। বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে শুয়ে তিনি জানান, ট্রেনে ওঠা সন্ন্যাসীরা তাঁদের শুধু ধাক্কাই দেয়নি। তাদের দেওয়া একটি আম খাওয়ার পর তাঁর মাথা ঘুরতে থাকলে পকেটের টাকা পয়সাও বার করে নেয়। পরে ধাক্কাধাক্কি করে তাঁদের ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার ভোরে বিহারের ধুলাবাড়ি এলাকায় অসমের তিন যুবককে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এঁদের মধ্যে একজন ঘটনাস্থলে মারা যান। বাকি দু’জনকে জখম অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদেরই মধ্যে একজন অনিল সাতনামি মঙ্গলবার রাতে জানিয়ে ছিলেন, ওই সন্ন্যাসীরা সম্ভবত কামাখ্যায় অম্বুবাচীর মেলায় যাচ্ছিলেন। ট্রেনে পা রাখার জায়গা ছিল না। দরজার ধারে দাঁড়িয়ে থাকার সময়ই তাঁদের ধাক্কা দেওয়া হয়। একজন পকেটের মানিব্যাগ বার করার চেষ্টাও করেছিল।
রেল পুলিশের আধিকারিকরা জানান, অনিলের কাকার ছেলে পঞ্চু সাতনামি মারা গিয়েছে। বানু এবং অনিলের বয়ান অনুসারে বোঝা যাচ্ছে, কামরূপ এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরায় ওঠা সন্ন্যাসীদের সঙ্গে যাত্রীদের কোনও গোলমাল হয়েছিল। বেঙ্গালুরুর গ্রানাইট কারখানার শ্রমিক এই তিনজনের সঙ্গে সম্ভবত গোলমাল মাত্রা ছাড়ায়। ট্রেনের দরজার সামনে কোনওভাবে ধাক্কাধাক্কির জেরেই তিনজন পড়ে যান। ওই দুই যুবক ছাড়া কামরার আর কোনও যাত্রী কিসানগঞ্জ বা অসমে কোনও স্টেশনে নেমে টাকা লুঠের চেষ্টার অভিযোগ করেছেন কি না তা দেখা হচ্ছে। আরপিএফের সিনিয়র সিকিউরিটি কমিশনার মহম্মদ সাকিব বলেছেন, ‘‘আমরা লুঠপাটের কোনও তথ্য এখনও পাইনি। পুরোটাই কামরার জায়গা দখল নিয়ে গোলমাল বলেই মনে হচ্ছে। তদন্ত চলছে।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অনিলের ডান হাতে আঘাত ছাড়াও হাড়ে চোট রয়েছে। বানুর মূলত মুখের বাঁ পাশে চোট রয়েছে। এ ছাড়াও চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়ায় দু’জনের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। চিকিৎসা চলছে।