শনিবার ভোটের দিনে। — নিজস্ব চিত্র
নির্বাচন পর্ব মিটতেই বুথ ভিত্তিক ফলাফল কেমন হতে পারে, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ শুরু করেছে যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলি। ওই ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন প্রার্থীরাও।
দলীয় সূত্রের খবর, বুথভিত্তিক প্রাথমিক রিপোর্টে তৃণমূল শিবিরের হিসেব অনুযায়ী এ বার জয়ের ব্যবধান বাড়বে। গত লোকসভায় তৃণমূলের রেণুকা সিংহ ৮৭ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হন।
তাঁর মৃত্যুতে খালি হওয়া আসনের উপনির্বাচনে ওই ব্যবধান বেড়ে দুই লক্ষের বেশি হতে পারে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সাধারণ মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। বড় ব্যবধানে দলের প্রার্থী জয়ী হবেন।” তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায়ও গত নির্বাচনের চেয়ে ব্যবধান বাড়িয়ে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
বিজেপি অবশ্য উপনির্বাচনের ফলাফলে তাদের জয়ের সম্ভবনা দেখছে। দল সূত্রের খবর, এদিন সকালে শীতলখুচি এলাকার বুথ ভিত্তিক রিপোর্ট নেন দলের প্রার্থী হেমচন্দ্র বর্মন। পরে কোচবিহারে এসে বাকি বিধানসভাগুলির সম্ভাব্য ফলাফল নিয়েও খোঁজ খবর নিয়েছেন তিনি। হেমচন্দ্রবাবু বলেন, “১৯৯৩টি বুথের মধ্যে দু’শো বুথে ব্যাপক ছাপ্পা দিয়েছে তৃণমূল। দুপুরের পর বেশিরভাগ বুথ থেকে দলের পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়। না হলে আমাদের জয় নিশ্চিত ছিল। তবু যা রিপোর্ট পাচ্ছি, তাতে এখনও লড়াই ফিফটি-ফিফটি রয়েছে। ফলে জয়ের ব্যাপারে আমরাও আশাবাদী।” জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি সম্রাট মুখোপাধ্যায় বলেন, “সন্ত্রাসের পরেও দলীয় প্রার্থীর ভোট বাড়বে। জয়ের আশা এখনই ছাড়ছিনা।”
বাম শিবির অবশ্য হাল প্রায় ছেড়ে দিয়েছে, নেতাদের বক্তব্যেই তা স্পষ্ট। বামফ্রন্টের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী নৃপেন রায় অবশ্য বলেন, “ ভোটই তো হয়নি। প্রহসন হয়েছে। তাই ফলের ব্যাপারে কী আর বলার আছে।” দলের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অক্ষয় ঠাকুর বলেন, “ গণনায় আমরা যাচ্ছি জল মাপতে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, “গণনার দিন প্রতীকী প্রতিবাদ হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২ নভেম্বর কোচবিহার পলিটেকনিক কলেজে সকালে গণনা শুরু হবে। সেখানেই ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার ঘেরাটোপে স্ট্রংরুমে সমস্ত ইভিএম রাখা হয়েছে। প্রথম দুই ধাপে রাজ্য পুলিশ, তৃতীয় ধাপে রয়েছে মহিলা সিআরপিএফ বাহিনী।
সিসিটিভি ক্যামেরাও রয়েছে গোটা চত্বর জুড়ে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “স্ট্রংরুমে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা হয়েছে।” প্রসঙ্গত, নির্বাচনের দিন সন্ত্রাস, ছাপ্পার অভিযোগে সরব হয় বিরোধীরা। নতুন করে ভোট নেওয়ার দাবিও ওঠে।