রোগী ধরতে দালাল নিয়োগ

জেলার একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভিযোগ, সরকারি ও বেসরকারি সব বাসস্ট্যান্ডেই ওই ভুয়ো চিকিৎসক নিযুক্ত ‘দালাল’দের দৌরাত্ম্য রয়েছে। যাদের খপ্পড়ে পড়েছিলেন অসমের ধুবুরি জেলার বাসিন্দা ঝুমা দাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৭ ১২:৩০
Share:

অভিযুক্ত: ভুয়ো ডাক্তার সন্দেহে ধৃত সুব্রত সরকার। নিজস্ব চিত্র

কখনও রিকশাওয়ালা, কখনও সাধারণ যাত্রী। রোগী ধরতে এদের ছদ্মবেশেই বাসস্ট্যান্ডে দালাল বসিয়ে রাখতেন ভুয়ো চিকিৎসক। রবিবার রাতে কোচবিহারের রূপনারায়ণ রোড থেকে ধৃত সুব্রত সরকারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই তথ্য পেয়েছে পুলিশ। এ দিকে ভুয়ো চিকিৎসক সন্দেহে তুফানগঞ্জের নাককাটিগছ এলাকাতেও এক ব্যক্তির বাড়িতে যায় প্রশাসন। ওই মহকুমার বলরামপুর এলাকা থেকে ভুয়ো পুষ্টিবিদ পরিচয় দিয়ে রোগী দেখার অভিযোগে আরেক এক ব্যক্তিকেও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।

Advertisement

সোমবার অভিযুক্ত সুব্রত সরকারকে কোচবিহার মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক সেলিম আনসারি ধৃতের আট দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। তাঁর সঙ্গেই গ্রেফতার হওয়া ওষুধের দোকানের মালিক রফিকুল ইসলাম সহ আরও দু’জনকেও আট দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পেরেছেন, তিরিশ বছর ধরে ওই চিকিৎসক কোচবিহারে চিকিৎসা করছেন। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “ওই ঘটনার তদন্ত চলছে।”

জেলার একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অভিযোগ, সরকারি ও বেসরকারি সব বাসস্ট্যান্ডেই ওই ভুয়ো চিকিৎসক নিযুক্ত ‘দালাল’দের দৌরাত্ম্য রয়েছে। যাদের খপ্পড়ে পড়েছিলেন অসমের ধুবুরি জেলার বাসিন্দা ঝুমা দাস। তিনি পরিচিত এক অস্থি বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার জন্য পথের হদিস জানতে চেয়েছিলেন বাসস্ট্যান্ডে বসে থাকা এক ব্যক্তির কাছে। ওই ব্যক্তি তাঁকে ভুল বুঝিয়ে একটি টোটোতে চাপিয়ে রূপনারায়ণ রোডে একটি ওষুধের দোকানে নিয়ে যান। সেখানেই বসতেন সুব্রতবাবু। ওই চিকিৎসক তাঁকে রক্তের নানা পরীক্ষা লিখে দেন। এরপর ওই ‘দালাল’ই তাঁদের ওষুধের দোকানের পাশেই একটি ভুয়ো ল্যাবরেটরিতে নিয়ে যায়। এ ভাবে সে দিনই প্রায় সাত হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের পরামর্শেই ওই বাসিন্দা কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই চিকিৎসক মুম্বই থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হয়ে এসেছেন বলে দাবি করেছেন। অভিযুক্ত সুব্রত অবশ্য বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়। আমি ভুয়ো চিকিৎসক নই।”

Advertisement

নাককাটিগছে কিছুদিন ধরে এমবিবিএস পরিচয় দিয়ে রোগী দেখছিলেন এক ব্যক্তি। বাসিন্দাদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা প্রশাসনকে জানান। প্রশাসন ও পুলিশের একটি দল গেলেও ওই ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি। তুফানগঞ্জের মহকুমাশাসক মণীশ ভার্মা বলেন, “ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement