বিক্রি দেখতে কেন্দ্রে হানা

শনিবার দুপুরে কলকাতার ভবানীভবন থেকে তিন অফিসার এসেছিলেন জলপাইগুড়ির ঘুঘুডাঙার ধান বিক্রি কেন্দ্রে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:০৩
Share:

নজরদার: জলপাইগুড়ির ঘুঘুডাঙায় পরিদর্শনে দুর্নীতি দমন শাখার অফিসারেরা। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

কৃষকদের থেকে ধান কেনার প্রক্রিয়া দেখতে সরকারি কেন্দ্রে হানা দিল কলকাতা থেকে আসা দুর্নীতি দমন শাখার বিশেষ দল। শনিবার দুপুরে কলকাতার ভবানীভবন থেকে তিন অফিসার এসেছিলেন জলপাইগুড়ির ঘুঘুডাঙার ধান বিক্রি কেন্দ্রে।

Advertisement

এই কেন্দ্রে ধান বিক্রি নিয়ে এর আগে একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। জেলা প্রশাসন থেকে পুলিশ সকলের কাছেই সেই অভিযোগ পৌঁছয়। কখনও কৃষকরা ধান নিয়ে এলে পনেরো দিন পরে খোঁজ নিতে বলা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কখনও কৃষকদের হাতে ভুয়ো ফর্ম ধরিয়ে ইচ্ছে মতো টাকা তোলার অভিযোগও ওঠে। ধান কেনা নিয়ে ফড়েদের সঙ্গে মিল শ্রমিকদের মারামারির অভিযোগও উঠেছিল। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই খবর পেয়েই দুর্নীতিদমন শাখার বিশেষ দল ঘুঘুডাঙা যায়। এই দলটি ধূপগুড়ির কেন্দ্রেও যেতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

শনিবার থেকেই কৃষকদের ধান বিক্রির চেক বিলি করা শুরু হয়েছে। এ দিন ঘুঘুডাঙায় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে ধান কেনা চলছিল। দুর্নীতি দমন দলটি সামনে দিয়ে না ঢুকে পিছনের মাঠ দিয়ে কেন্দ্রে আসেন। সেখানেই গাড়ি রাখা হয়। ধান যেখানে ওজন করা হচ্ছে সেখানে গিয়ে অফিসারেরা কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। কোন বস্তায় কার ধান রয়েছে তা যাচাই করেন। এরপর অফিসে গিয়ে চেক বিলির প্রক্রিয়াও দেখেন। খাদ্য দফতরের কর্মীদের ডেকে নানা তথ্যও জানতে চান তাঁরা। খতিয়ে দেখা হয় কেন্দ্রের নানা নথিও।

Advertisement

রাজ্য পুলিশের দল এলেও ফড়েদের কতটা ঠেকানো যাবে তা নিয়ে সন্দেহে রয়েছেন কৃষকদের একটি বড় অংশ। এ দিন থেকে চেকের মাধ্যমে ধানের দাম মেটানো শুরু হলেও ফড়েদের চিহ্নিত করার কোনও উপায় বের করা হয়নি বলে অভিযোগ। বিডিও অফিস থেকে চেক বিলি করতে আসা এক কর্মী বলেন, “আমরা তো এখানকার বাসিন্দা নই। কে ফড়ে কে কৃষক চিনব কী করে।”

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী কোনও কৃষক ধান বিক্রি কেন্দ্রে এলে তাঁর ধানের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা হবে কত খারাপ ধান থাকতে পারে। সেই হিসেবে কিছু অংশ বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু জলপাইগুড়ির ঘুঘুডাঙায় সেরকম কোনও পরীক্ষা না করে সকলের থেকেই কুইন্টাল পিছু চার কেজি ধান মোট ধানের হিসেব থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ দিন দীপেশ রায় প্রায় ৪০ কুইন্টাল ধান বিক্রি করেছেন। সেই হিসেবে তাঁর থেকে প্রায় এক কুইন্টাল কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর আক্ষেপ, “আমার ধানটা পরীক্ষা তো করে নিতে পারত। তার আগেই কুইন্টালে চার কেজি কমিয়ে দিল। এ জন্যই ফড়েদের কাছে সকলে যায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন