প্রতীকী ছবি
গতি বাড়াতে ভিআরডিএল ল্যাবের পাশাপাশি অ্যান্টিজেন কিটে করোনা পরীক্ষা শুরু হল মালদহে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে জেলায় প্রায় এক হাজার কিট এসেছে। শনিবার ইংরেজবাজার শহরে এই কিটে কিছু পরীক্ষাও করা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১০৭ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তার মধ্যে আন্টিজেন কিটে পরীক্ষায় পজ়িটিভ ৯ জন। জেলায় আক্রান্ত হলেন ২৩৪২। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ইংরেজবাজার, গাজল, মানিকচক, ইংরেজবাজার ও বামনগোলা ব্লকে আক্রান্ত বেশি।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে পুরাতন মালদহ শহরে করোনা আক্রান্ত এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ২৯ জুলাই শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৩ বছরের ওই বাসিন্দার লালারসের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল। উপসর্গহীন থাকায় তিনি বাড়িতেই ছিলেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতের দিকে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁকে পুরাতন মালদহের নারায়ণপুর বাইপাসের কোভিড হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রাস্তাতেই তিনি মারা যান। এ নিয়ে জেলার করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা হল ১৩।
করোনা সংক্রমণে আড়াই হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া মালদহ জেলায় কেন নমুনা সংগ্রহ বা পরীক্ষা আরও বাড়ানো হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, জুন মাসে মালদহ মেডিক্যালে প্রতি দিন জেলার ৫০০-৬০০ নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল। জুলাই মাসের শেষ দিকে তা ৩০০ থেকে সাড়ে তিনশো হয়। কোনও কোনও দিন আরও কম হত।
দফতরের বক্তব্য, করোনা পরীক্ষায় গতি আনতে অ্যান্টিজেন কিটের ব্যবহার শুরু করা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম ধাপে জেলায় দেড়শোটি অ্যান্টিজেন কিট এসেছিল। পরে আরও ৭৫০ কিট পাঠানো হয়েছে। এ দিন থেকে ইংরেজবাজার শহরে ওই কিটে পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
মালদহ মেডিক্যালের সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘জরুরি বিভাগ এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডের রোগীদের লালরসের নমুনা ওই কিটে পরীক্ষা করা হচ্ছে। শহরের কিছু এলাকাতেও পরীক্ষা চলছে।’’ তিনি জানান, অ্যান্টিজেন কিটে পরীক্ষার মাধ্যমে ৩০-৪০ মিনিটের মধ্যে ফলাফল জানা যায়। এ ক্ষেত্রে রোগীর নাসারন্ধ্র থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সঙ্কটজনক রোগীদের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতির পরীক্ষা ফলপ্রসূ হবে। মেডিক্যালের ল্যাবরেটরিতে সোয়াব পরীক্ষাও চলছে।
মালদহের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘আপাতত শহরের কিছু এলাকা এবং মেডিক্যালের রোগীর জন্য অ্যান্টিজেন কিটে পরীক্ষা চালু করা হয়েছে।’’
তবে অ্যান্টিজেন কিটের ফলাফল নিয়ে চিকিৎসকদের অনেকেই একমত হতে পারেননি। তাঁদের মতে, এতে ‘নেগেটিভ’ ফল হওয়ার পরেও কারও করোনা হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে না। সে ক্ষেত্রে সোয়াব পরীক্ষা করতে হতে পারে। উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের ক্ষেত্রে অবশ্যই দ্বিতীয় বার পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে। তবে দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং বাড়তে থাকা করোনার প্রকোপে এই পরীক্ষা কাজে আসবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একাংশ।