মাইকের শব্দের আড়ালে অস্ত্রের কারখানা

লুৎফর পেশায় মিষ্টি ব্যবসায়ী। গ্রামের মোড়ের মাথায় একটি মিষ্টির দোকানও রয়েছে তাঁর। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন মাস দুয়েক আগে নিজের বাড়িটা নতুন করে তৈরি করেছিল লুৎফার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০৯:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

রোজ সন্ধে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বাজত মাইক। সেই আওয়াজে ঢাকা পড়ে যেত অস্ত্র তৈরির শব্দ। মালদহের নওদা যদুপুরের দেবীপুর থেকে ধৃত সাত অস্ত্র কারবারীকে জেরা করে এমনই তথ্য পেয়েছে পুলিশ। বুধবার মালদহ জেলা আদালত থেকে ধৃতদের ১৪ দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। কী উদ্দেশ্যে অস্ত্র তৈরি হচ্ছিল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এই ঘটনায় অন্য কোনও চক্র জড়িত রয়েছে কি না তাও দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ।

Advertisement

মঙ্গলবার কালিয়াচক থানার নওদা যদুপুর পঞ্চায়েতে দেবীপুর গ্রামে লুৎফর শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে অস্ত্র কারখানার হদিশ পায় পুলিশ। লুৎফর পেশায় মিষ্টি ব্যবসায়ী। গ্রামের মোড়ের মাথায় একটি মিষ্টির দোকানও রয়েছে তাঁর। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন মাস দুয়েক আগে নিজের বাড়িটা নতুন করে তৈরি করেছিল লুৎফার। সেখানেই চলছিল অস্ত্র কারখানা। মাস খানেক ধরে ওই বাড়িতে গভীর রাত পর্যন্ত মাইক বাজানো হতো বলে দাবি স্থানীয়দের একাংশের।

নওদা যদুপুর এলাকা দখল নিয়ে এর আগে দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতী বকুল শেখ ও জাকির শেখ গোষ্ঠীর মধ্যে প্রায়শই বোমা, গুলির লড়াই হয়েছে। তাতে একাধিক প্রাণহানিও হয়েছে। যদিও এখন বকুল, জাকির-সহ এলাকার বহু দুষ্কৃতী জেলে রয়েছে। তারপরেও ওই এলাকায় এত বড় অস্ত্র কারখানার হদিশ পাওয়াতে চিন্তায় জেলা পুলিশ-প্রশাসন। ঘটনাস্থল থেকে ৪২টি সেভেন এমএম, ৬টি নাইন এমএম, ১৫৫টি ম্যাগজিন, শতাধিক লোহার পাইপ, দু’টি ড্রিলিং মেশিন, ছেনি-সহ একাধিক অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার হয়েছে। ঘটনায় বাড়ির মালিক লুৎফর শেখ-সহ গ্রেফতার হয়েছে সাতজন। তার মধ্যে মহম্মদ সাহিদ শেখ, মহম্মদ মুরতাজা, মহম্মদ আকবর শেখ, মহম্মদ কামিরুদ্দিন শেখ, মহম্মদ মেহবুব আলি বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা। এছাড়া সামিম শেখ নামে স্থানীয় এক কারবারীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে মাইক বক্সটিও। অস্ত্র তৈরির কারবারের সঙ্গে বকুল বা জাকির গোষ্ঠীর যোগসাজশ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন